Advertisement
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিল্পের সামনে বাজেটের কাটাছেঁড়া, কর নিয়ে কঠোর আবার আক্ষেপও

কোম্পানি কর ফাঁকি রুখতে কড়া কেন্দ্র

জেটলির যুক্তি, ‘‘৯৯% সংস্থাই এখন ২৫% করের আওতায়। মাত্র ৭ হাজারকে দিতে হবে ৩০%। কিন্তু নানা রকম ছাড় ধরে বাস্তবে করের বোঝা গড়ে ২২-২৩%।’’

চুমুক: ‘চায়ে পে চর্চা’। বাজেটে বসানো কর নিয়ে? ছবি: পিটিআই

চুমুক: ‘চায়ে পে চর্চা’। বাজেটে বসানো কর নিয়ে? ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

দেশে খাতায়-কলমে সংস্থার সংখ্যা ১৫ লক্ষ। কিন্তু রিটার্ন জমা দেয় মোটে তার অর্ধেক। বাকিরা হয় হিসেব দেয় যে, তাদের কোনও মুনাফা হয়নি। নইলে বলে ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বহু সংস্থাকেই আসলে কালো টাকা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে সন্দেহ মোদী সরকারের। এগুলির বিরুদ্ধে এ বার তাই কোমর বেঁধে অভিযানে নামতেই বাজেটে কোম্পানি কর আদায়ে আরও কড়া হওয়ার দাওয়াই দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

বাজেটের পরে সোমবার বণিকসভাগুলির সঙ্গে বৈঠকে শিল্প মহলের সামনে বাজেটের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনায় বসেছেন জেটলি ও অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা। অর্থসচিব হাসমুখ আঢিয়া বলেন, ‘‘জিএসটি ও নোট বাতিলের ফলে করদাতার সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু চাকরিজীবীরা যে রকম সৎ ভাবে কর মেটান, ব্যবসায়ীদের একাংশ কিন্তু সে পথে হাঁটেন না। এই বৈষম্য দূর করার চেষ্টা হচ্ছে।’’

শিল্প মহলের দাবি ছিল, কোম্পানি কর সব সংস্থার জন্য ২৫% হোক। জেটলি বাজেটে তা ৩০% থেকে কমিয়ে ২৫% করেছেন ঠিকই। কিন্তু বছরে ব্যবসা ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে তবেই এই সুবিধা মিলবে। আজ সিআইআই ও ফিকি, দুই বণিকসভার কর্তারাই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

জেটলির যুক্তি, ‘‘৯৯% সংস্থাই এখন ২৫% করের আওতায়। মাত্র ৭ হাজারকে দিতে হবে ৩০%। কিন্তু নানা রকম ছাড় ধরে বাস্তবে করের বোঝা গড়ে ২২-২৩%।’’

শিল্প মহলের দাবি ছিল, সব ছাড় তুলে নিয়ে কোম্পানি কর কমানো হোক। জেটলির যুক্তি, অনেক ছাড় ৫-১০ বছরের জন্য ঘোষণা করা আছে। সেগুলি আচমকা তুলে দিলে শিল্পই মুশকিলে পড়বে। প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের চেয়ারম্যান সুশীল চন্দ্রের হিসেব, এখনই সকলের কাছে ২৫% কর নিলে সরকারেরও প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হত।

শিল্পের অভিযোগ, এমনিতেই নোট বাতিল ও জিএসটি-র ধাক্কায় তারা বেসামাল। তার উপরে চড়া কোম্পানি করের বোঝা বিশ্ব বাজারের প্রতিযোগিতায় তাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। আমেরিকা বা অন্যান্য দেশে এই হার অনেক কম। আঢিয়া অবশ্য জানান, আমেরিকায় কর ফাঁকি অনেক কম।

• চাকরিজীবীদের তুলনায় মাথা পিছু কর কম মেটান ব্যবসায়ী ও পেশাদাররা। যথাক্রমে ৭৬,৩০৬ এবং ২৫,৭৫৩ টাকা

• রিটার্ন জমা দেয় না বা মুনাফা দেখায় না অর্ধেক সংস্থাই

• সন্দেহ, এগুলিকে লাগানো হচ্ছে কালো টাকা লেনদেনের কাজে

• রিটার্ন ফাইল না করলেই ব্যবস্থা

• জিএসটি-তে ব্যবসার অঙ্ক বুঝে নিয়ে খোঁজা হবে কর ফাঁকি

• আগে সব ছাড় বন্ধ হলে, একমাত্র তবেই বড় সংস্থার কোম্পানি কর কমানো যাবে

• আয়কর ফাঁকি কমলে, করের বোঝা কমানোও সহজ হবে কেন্দ্রের পক্ষে

অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের আরও যুক্তি, সাধারণত চাকরিজীবীদের থেকে ব্যবসায়ীরা গড়ে বেশি আয় করেন। ফলে তাঁদের করও বেশি মেটানোর কথা। কিন্তু ২০১৬-’১৭ সালের হিসেব বলছে, ১.৮৯ কোটি চাকরিজীবী মাথা পিছু ৭৬,৩০৬ টাকা কর মিটিয়েছিলেন। অথচ ১.৮৮ কোটি ব্যবসায়ী ও পেশাদারের তা মাত্র ২৫,৭৫৩ টাকা। অর্থসচিব আজ মনে করিয়েছেন, জিএসটি চালুর পরে এখন সকলের ব্যবসার অঙ্ক সরকারের জানা। ফলে আয়করে ফাঁকি ধরা কঠিন নয়।

অর্থ মন্ত্রকের যুগ্ম-সচিব রাজেশ ভুট বলেন, ‘‘মুনাফা হোক বা না-হোক, সব সংস্থাকেই রিটার্ন দিতে হবে। এখনকার আইনে থাকা কিছু শর্ত তুলে দেওয়া হচ্ছে। এ বার রিটার্ন না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Budget 2018 Union Budget Central Budget Finance Tax Arun Jaitley বাজেট ২০১৮ অরুণ জেটলি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy