প্রতিযোগিতার বাজারে নিজেদের জায়গা শক্ত করতে এ বার নতুন উদ্যমে ঝাঁপাচ্ছে রাজ্য সরকারি সংস্থা বাংলার ডেয়ারি (পূর্বতন মাদার ডেয়ারি কলকাতা)। এক বছরের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে নতুন দুই কারখানা তৈরি করে উৎপাদন ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়ানো, নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসা ও নতুন সাজে অত্যাধুনিক বিপণি তৈরির পরিকল্পনা করেছে তারা। যার প্রথম ধাপ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
বর্তমানে বাংলার ডেয়ারির দিনে দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ১.২০ লক্ষ লিটার। তার পুরোটাই ডানকুনির কারখানায় উৎপাদিত হয়। এ বার নদিয়ার হরিণঘাটায় দৈনিক ১.৫ লক্ষ লিটার ক্ষমতার কারখানা গড়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ১ লক্ষ লিটার উৎপাদন জুন-জুলাই নাগাদ শুরু হবে। বাকি ৫০,০০০ লিটার উৎপাদন শুরু হবে ২০২৬-এর প্রথমার্ধে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের মাটিগাড়ায় আরও একটি কারখানা তৈরির কাজ এক বছরে শেষ হবে। সেখানে আরও ৫০,০০০ লিটার উৎপাদন হবে। কারখানা দু’টি পুরো চালু হলে সংস্থার দৈনিক দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ছোঁবে ৩.২ লক্ষ লিটার। বাংলার ডেয়ারির এমডি গৌরীশঙ্কর কোনার বলেন, রাজ্যজুড়েই দৈনিক দুধের চাহিদা বাড়ছে। সেই বাজার ধরতে পরিকল্পনা করে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে দু’টি নতুন কারখানা তৈরি করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে কড়া প্রতিযোগিতার মুখে ফেলবে বাংলার ডেয়ারি।’’
এই দু’টি নতুন কারখানার জন্য সরকার প্রায় ১১০ কোটি টাকা খরচ করছে বলে জানিয়েছেন গৌরীশঙ্কর। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ভাবে কারখানা চালাতে বিদেশ থেকে উন্নত মানের যন্ত্রাংশ আসছে। ফলে দুধ বা অন্য পণ্যের গুণমান নিয়ে আপোস করা হবে না। এই বাড়তি উৎপাদনের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন দুগ্ধ ইউনিয়নগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হচ্ছে। পশুপালকদের লাভ মাথায় রেখে অন্য সংস্থার চেয়ে বেশি দামে তাঁদের থেকে দুধ নেওয়া হবে। ফলে কাঁচামালে সমস্যা হবে না।
দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে ফ্লেভারড মিল্ক, বাটার মিল্ক, মিল্ক পাউডারের মতো নতুন পণ্য আনার পরিকল্পনাও করেছে বাংলার ডেয়ারি। হরিণঘাটাতেই ৭২ কোটি টাকায় রাজ্যের প্রথম স্কিমড মিল্ক পাউডার কারখানা তৈরি হচ্ছে। উৎপাদন শুরু হবে ২০২৬-এ। তার বাইরে লস্যি, পনির, দই বা পেঁড়ার মতো পণ্য যা এখন পাওয়া যায়, তা-ও বিক্রি হবে। সঙ্গে রয়েছে সংস্থার খুচরো বিপণি এবং ডিপোগুলি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনাও। এখন সেখানে অন্য সংস্থার পণ্য বেশি থাকে। এ বার বাংলার ডেয়ারির পণ্য বেশি রাখতে নির্দিষ্ট মাপকাঠি স্থির করা হবে। বিপণি ও ডিপো দেখতে কেমন হবে, তা-ও ২-৩ মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট করা হবে। এই সব কিছু নিয়ে শীঘ্রই সবপক্ষের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন সংস্থার কর্তারা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)