আগামী এপ্রিল থেকে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দৈনিক উৎপাদন ১.৩৮ লক্ষ ব্যারেল বাড়াতে চলেছে তেল উৎপাদক এবং রফতানিকারী দেশগুলি এবং তাদের সহযোগীরা। একত্রে যারা বৃহত্তর ওপেক গোষ্ঠী (ওপেক প্লাস) হিসেবে পরিচিত। এই ঘোষণা বাজারের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। তার পরেই বিশ্ব বাজারে ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৭০ ডলারের নীচে নেমে আসে। একটা সময়ে তা হয় ৬৯.৭৫ ডলার। যা ছ’মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ভারতীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় ছিল ৬৯.৯ ডলার। আমেরিকার ডব্লিউটিআই নেমেছে ৬৬ ডলারের ঘরে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চিনের পণ্যে চড়া আমদানি শুল্ক কার্যকর করেছেন। পাল্টা শুল্ক বাড়িয়েছে চিন। কানাডা এবং মেক্সিকোও একই পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এর ফলে বিশ্ব বাজারে তৈরি হয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার মাথাচাড়া দেওয়া এবং আর্থিক কর্মকাণ্ডের গতি কমার আশঙ্কা। যা জ্বালানির চাহিদাও কমাবে। তেলের দাম কমার এটাও অন্যতম কারণ।
এই প্রেক্ষিতে যথারীতি প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি জ্বালানির এই দাম কমার ইতিবাচক প্রভাব ভারতে পড়তে পারে? পেট্রোপণ্যের দাম কমার কি কোনও সম্ভাবনা আছে? এই প্রশ্নে কিন্তু ভারসা জোগাচ্ছে না কোনও মহল। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ডলারের দাম ঘোরাফেরা করছে ৮৭ টাকার ঘরে। তা উল্লেখযোগ্য রকম কমার সম্ভাবনা নেই। ফলে তেলের আমদানি খরচ চড়াই থাকছে। ফলে আপাতত আশাবাদী হওয়ার বিশেষ কারণ নেই।
ওপেক প্লাস হঠাৎ কেন নিল তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত? একটি মহলের ব্যাখ্যা, এই রাষ্ট্রগোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য রাশিয়া। তেল রফতানিকারী দেশগুলির এখনকার সিদ্ধান্ত যতটা না অর্থনৈতিক যুক্তির উপরে দাঁড়িয়ে, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। ট্রাম্প নিজে চাইছেন বিশ্ব বাজারে প্রচলিত জ্বালানির সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমাতে। তার প্রভাব পড়ছে ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তে। তবে সংশ্লিষ্ট সকলেরই মত, এর ফলে ভারতের সামনে আরও কম দামে তেল আমদানির সুযোগ বাড়ে কি না, সে দিকে নজর রাখতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)