সম্প্রতি দেশের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিদ্যুৎমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে ফের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানোর উপরে জোর দিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। আর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই বার্তার পরেই নতুন করে উঠছে প্রশ্ন। তা হলে কি ফের বাড়ি বাড়ি স্মার্ট মিটার লাগানোর প্রক্রিয়া চালু করতে পারে রাজ্য? কারণ, কিছু দিন আগে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল ১০ জুলাই থেকে আপাতত তা বসানোর কাজ বন্ধ রাখার কথা। বিভিন্ন গ্রাহকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে এবং এ নিয়ে বাড়তে থাকা ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে দাঁড়িয়ে সাধারণ গ্রাহকদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার।
খট্টর অবশ্য স্মার্ট মিটারের উপাকারিতার কথা বলেছেন। দাবি করেছেন, ‘‘সময়ে গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল বাবদ বকেয়া টাকা হাতে পেতে হলে স্মার্ট মিটার অত্যন্ত উপযোগী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পরিচালিত এই মিটারের মাধ্যমে গ্রাহকও দেখতে পাবেন ঠিক কতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন।’’ সেই সঙ্গে পূর্ব-ভারতের রাজ্যগুলিকে খট্টরের নির্দেশ, সমস্ত সরকারি দফতর ও আবাসনে অগস্টের মধ্যে এবং বাণিজ্যিক সংস্থা বা কল-কারখানায় নভেম্বরের মধ্যে তা লাগানোর কাজ শেষ করতে হবে। তাঁর দাবি, বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির যে বকেয়া রয়েছে, তা হাতে পেতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রী।
রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, আপাতত গৃহস্থের বাড়িতে স্মার্ট মিটার লাগানোর পরিকল্পনা নেই। তবে বাণিজ্যিক কিংবা শিল্প ক্ষেত্রে এবং সরকারি সব দফতর কিংবা আবাসনে তা লাগানো হবে। যদিও এই নিয়ে সরকারি কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। শুধু সংবাদমাধ্যমকে বিবৃতি পাঠিয়ে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সেই কারণেই বাড়ি বাড়ি তা বসানোর প্রক্রিয়া বহাল থাকার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংগঠন অ্যাবেকার সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বিশ্বাসের মতে, আপাতত গ্রাহকদের চাপে পড়ে এটি বসানো স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। তবে এটা সরকারি কৌশল। সম্পূর্ণ ভাবে স্মার্ট মিটার বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কোনও বিশ্বাস নেই। গ্রাহকদের একাংশেরও আশঙ্কা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বার্তার পরে আবার না তা বাড়িতে বসানো শুরু হয়।
উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো বেশ কিছু জেলায় প্রায় ৫০ হাজার স্মার্ট মিটার বসেছে সাধারণ গ্রাহকদের বাড়িতে। তবে যে মিটার লাগানো হয়ে গিয়েছে, সেগুলি খুলে নেওয়া হবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)