Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আবির পেরিয়ে ক্ষোভের আগুন

তার জায়গায় বৃহস্পতিবার সেই একই রাস্তা আগুন বিক্ষোভের আঁচে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ায় কর্মীরা ক্ষুব্ধ। উদ্বিগ্ন পাওনা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪০
Share: Save:

বছর আটেক আগে হাওড়ায় বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার গেটের সামনের এই রাস্তাই রাঙা হয়ে গিয়েছিল আবিরে। ঢেকে গিয়েছিল ফুলের পাপড়িতে। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে যে দিন ধুঁকতে থাকা রুগণ্‌ এই সংস্থাকে হাতে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রেল মন্ত্রক। তার জায়গায় বৃহস্পতিবার সেই একই রাস্তা আগুন বিক্ষোভের আঁচে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেওয়ায় কর্মীরা ক্ষুব্ধ। উদ্বিগ্ন পাওনা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে।

এক কর্মী বলেন, ‘‘গত বছরও সংস্থা দেড় কোটি টাকা লাভের মুখ দেখেছে। এখনও ১,২০০টি ওয়াগন তৈরির বরাত রয়েছে ঝুলিতে। ১৮টি তৈরির কাজ চলছে। তা সত্ত্বেও ঝাঁপ ফেলার সিদ্ধান্ত নিল কী করে?’’ আর এক কর্মীর দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো গোড়া থেকেই কারখানা চালু রাখতে উদ্যোগী। তাহলে তিনি কেন কারখানা পুনরুজ্জীবনের ব্যবস্থা করবেন না?’’ অনেকের প্রশ্ন, বকেয়া টাকা মিলবে তো? এ সবের মধ্যেও কিন্তু এ দিন কাজ একেবারে বন্ধ হয়নি কারখানায়।

সংস্থা বন্ধ হওয়া রুখতে মমতা পথে নামার ডাক দিলেও এত দিন তা না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে কর্মীদের মধ্যে। এ দিন অবশ্য মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় ও মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্রের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল কারখানার গেটে আসে। অরূপবাবুর দাবি, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।

একই ছবি বার্নপুর কারখানায়। বৃহস্পতিবার সেখানেও কর্মীরা কারখানায় জড়ো হয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। ক্ষতিপূরণ কী ভাবে মিলবে, আবাসন ছেড়ে যেতে হবে কি না— সে সব নিয়েই আশঙ্কায় তাঁরা। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘একের পর এক সংস্থা বন্ধ করছে কেন্দ্র। এর প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন করতে হবে।’’ আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য বলেন, ‘‘লোকসানে চলা সংস্থার পিছনে জনগণের টাকা ব্যয় না করে সেটি বন্ধ করা কেন্দ্রের সাহসী পদক্ষেপ।’’

বার্ন গুটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিন সংসদের ভিতরে ও বাইরেও সরব হয়েছে তৃণমূল। এ বিষয়ে রাজ্যসভায় লিখিত নোটিস জমা দেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। সংসদের অন্য কাজ বন্ধ রেখে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি তোলা হয়। প্ল্যাকার্ড নিয়ে ওয়েলেও নামেন কয়েক জন। নোটিসে বলা হয়েছে, প্রাচীন, ঐতিহ্যশালী সংস্থাটিকে বন্ধ করার এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক, শ্রমিকবিরোধী এবং একতরফা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE