Advertisement
E-Paper

শুল্কে আঁটিসাঁটি, ভ্যাটে চিমটি কাটি

এ নিয়ে নতুন করে কোনও বিবৃতি অর্থ মন্ত্রক দেয়নি। কিন্তু কেন্দ্র যে আপাতত শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে না, তা বলেছেন ওই মন্ত্রকের কর্তারা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২২

পেট্রলের দর গত ৫৫ মাসে সর্বোচ্চ। রেকর্ড ডিজেলের দামেও। নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের। তার উপর রোজ নিয়ম করে এ নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করছেন বিরোধীরা। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর পরেও এখন উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাইয়ের কথা ভাবছে না কেন্দ্র। তাদের দাবি, তেমনটা করলে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশা উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই তার বদলে বরং রাজ্যগুলিকে ফের যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) কমানোর পরামর্শ দিচ্ছে তারা।

এ নিয়ে নতুন করে কোনও বিবৃতি অর্থ মন্ত্রক দেয়নি। কিন্তু কেন্দ্র যে আপাতত শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে না, তা বলেছেন ওই মন্ত্রকের কর্তারা।

এক কর্তার কথায়, ‘‘শেষ পর্যন্ত পেট্রল-ডিজেলের দাম কমবে কি না, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু অন্তত অর্থনীতির যুক্তি বলে যে, শুল্ক ছাঁটাই সম্ভব নয়। কারণ, তাতে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার (জিডিপির ৩.৩%) মধ্যে বেঁধে রাখা শক্ত।’’

তাঁদের যুক্তি, প্রতি টাকা উৎপাদন শুল্ক কমলে, রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ ১৩ হাজার কোটি। তাই তাতে ঘাটতির নিশানা নড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। ওই কর্তার কথায়, ‘‘তেলের দাম এক-দু’টাকা বাড়লে, মূল্যবৃদ্ধি মাথাচাড়া দেয় না। তার থেকে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশি জরুরি।’’

কিন্তু উল্টো দিকে, ঢাকে কাঠি পড়তে শুরু করেছে পরের লোকসভা ভোটের। অথচ অর্থনীতি নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে মোদী সরকারের। শিল্প ঝিমিয়ে। তৈরি হচ্ছে না কাজের সুযোগ। এই পরিস্থিতিতে অন্তত তেলের দর নিয়ে ক্ষোভে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা সরকারকে করতেই হবে বলে ধারণা অনেকের।

আসলে প্রায় নাগাড়ে বেড়ে চলা তেলের দাম নিয়ে ক্ষোভের পারদ চড়ছে আমজনতার। অভিযোগ, আগে তেলের দাম অল্প টাকা বাড়লেই তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর হত। ক্ষোভ প্রকাশ করতেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু এখন রোজকার অল্প-অল্প করে দাম চড়া তেমন টেরই পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ পকেটে কামড় বসছে নিঃশব্দে।

এই ক্ষোভ আঁচ করেই সম্ভবত রাজ্যগুলিকে ফের তেলে ভ্যাট কমানোর আর্জি জানাচ্ছেন ওই কর্তারা। এর আগেও কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, তেলে আদায় করা ভ্যাটের পুরোটা যায় রাজ্যগুলির কোষাগারে। তার সঙ্গে উৎপাদন শুল্কের ৪২% পায় তারা। ফলে মানুষকে স্বস্তি দিতে তাদের উচিত ভ্যাট কমানো। রাজ্যও অবশ্য সেই তির প্রতিবার ঘুরিয়ে দেয় কেন্দ্রের দিকেই। এই কর থেকে পশ্চিমবঙ্গের আয় মাসে ৫০০ কোটি।

করের বোঝা

উৎপাদন শুল্ক যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট)* সেস

পেট্রল ১৯.৪৮ টাকা ১৪.৫৮ টাকা ১ টাকা

ডিজেল ১৫.৩৩ টাকা ৯.৫২ টাকা ৭১ পয়সা

শুল্ক ও সেস প্রতি লিটারে। * দামের সঙ্গে বদলায়। এই হিসেব কলকাতায় সোমবারের

চাপে কেন্দ্র

ইউপিএ জমানায় তেলের চড়া দর নিয়ে নিয়মিত আক্রমণ শানাতেন নরেন্দ্র মোদী। অথচ তাঁর নিজের সময়ে দাম আকাশছোঁয়া।

অশোধিত তেলের দর তুলনায় আরও অনেক বেশি থাকার সময়েও আগে কখনও এতটা ওঠেনি জ্বালানির দাম। নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের।

বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম তলানিতে থাকাকালীন ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে ন’বার উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছিল কেন্দ্রী সরকার। সেখানে তা কমেছে মাত্র এক বার।

ওই ১৫ মাসে পেট্রল-ডিজেলে বাড়তি উৎপাদন শুল্ক চেপেছিল যথাক্রমে ১১.৭৭ এবং ১৩.৪৭ টাকা। কেন্দ্রের রাজকোষে ঢুকেছে ২.৪২ লক্ষ কোটি। অনেকের প্রশ্ন, তা হলে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়ার সময়ে কেন্দ্র শুল্ক ছাঁটার পথে হাঁটবে না কেন?

বাজেটেও উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে প্রস্তাব ছিল সম পরিমাণ সেস বৃদ্ধির।

তবুও পিছপা

কেন্দ্রের দাবি, প্রতি টাকা উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাইয়ে রাজস্ব ক্ষতির অঙ্ক ১৩,০০০ কোটি টাকা।

শুল্ক ছাঁটলে কঠিন হবে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা। কিন্তু যে কোনও মূল্যে ওই লক্ষ্যপূরণ জরুরি।

petrol price diesel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy