ক্ষুদ্রঋণ শিল্পের জন্য পৃথক নিয়ন্ত্রক চালুর দাবি জানাল সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। পাশাপাশি গ্রাহকদের যাতে কম সুদে ঋণ দেওয়া যায়, সে জন্য ব্যাঙ্কগুলিকেও ব্যবস্থা করতে আর্জি জানিয়েছে তারা। বলেছে, সে জন্য ওই সমস্ত সংস্থাগুলিকেও কম সুদে ঋণ দিক ব্যাঙ্কিং শিল্প। উল্লেখ্য, সাধারণ ভাবে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির থেকে ধার নিয়ে সেই টাকা গ্রাহকদের ঋণ হিসেবে বণ্টন করে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি।
সম্প্রতি কলকাতায় অ্যাসোসিয়েশন অব মাইক্রো ফিনান্স ইনস্টিটিউশন্স অব ইন্ডিয়ার সম্মেলনে সংগঠনের চেয়ারম্যান অজিত কুমার মাইতি বলেন, “অভিযোগ ওঠে ক্ষুদ্রঋণসংস্থাগুলি গ্রাহকদের থেকে বেশি সুদ নেয়। আমরা ব্যাঙ্কের থেকে তহবিল সংগ্রহ করে ঋণ দিই। ব্যাঙ্কই ১৩%-১৪% সুদ নেয়। তার উপরে ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবা চালানোর খরচ বেশি। তাই এতে সুদের হারও ব্যাঙ্কের থেকে বেশি হয়।’’ এই কারণে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাকে দেওয়া সুদে ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রকে ভেবে দেখার আর্জি জানান তিনি। ক্ষুদ্রঋণ শিল্পের জন্য পৃথক নিয়ন্ত্রক জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাঙ্কের মতো এই সব সংস্থার নিয়ন্ত্রক রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। দুই শিল্পই ঋণ দিলেও ব্যবসার মধ্যে বিস্তর ফারাক। ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার মূল্যায়নও ব্যাঙ্কের মাপকাঠি মেনে হয়। তা বদলানো জরুরি।
মাইক্রো ফাইনান্স ইনস্টিটিউশন নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান মনোজ নাম্বিয়ারের দাবি, ক্ষুদ্রঋণে সর্বোচ্চ সুদ ২৪%। কিন্তু তা হিসাব হয় প্রতি মাসে বকেয়ার উপরে ভিত্তি করে। তাই আখেরে তা দাঁড়ায় ১৩.৫%। তা ছাড়া এই সংস্থাগুলি যে শর্তে ঋণ দেয়, ব্যাঙ্কের পক্ষে তা সম্ভব নয়।মহাজনদের সুদ ক্ষুদ্রঋণের কয়েকগুণ। বহু মহিলাও এখান থেকে ঋণ নেন। তাই একে শুধু সুদ দিয়ে বিচার করা ঠিক নয়। ক্ষুদ্রঋণকে সমাজকল্যাণের অঙ্গ হিসেবে দেখার কথা বলেছেন বন্ধন ফিনান্সিয়াল হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর ঘোষ। স্টেট ব্যাঙ্কের জেনারাল ম্যানেজার সনাতন মিশ্রের মতে, এই ব্যবসাকে লাভজনক করে তোলা জরুরি। বন্ধন ব্যাঙ্কের এমডি-সিইও পার্থপ্রতিম সেনগুপ্তের আবার দাবি, এই শিল্পকে টিকে থাকতে হলে ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)