অর্থনীতি নিয়ে বেশ কিছু ভাল খবর এলেও ক্রমশ চিন্তা বাড়াচ্ছে পরিষেবা ক্ষেত্র। সমীক্ষা বলছে, গত মাসে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ইন্ডিয়া-র সার্ভিসেস বিজ়নেস অ্যাক্টিভিটি ইন্ডেক্স নেমে দাঁড়িয়েছে ৫৬.৯-এ। গত এক বছরে সব চেয়ে কম। অক্টোবরে সূচকটি ছিল ৫৮.৪। সমীক্ষা জানাচ্ছে, গত মাসে চড়া দামের জেরে হাঁসফাঁস দশা কিছুটা কাটলেও, বরাত না বাড়ার প্রভাব পড়েছে পরিষেবায়। তা সত্ত্বেও দীর্ঘ মেয়াদে তা উপরের দিকেই থাকারই সম্ভাবনা। উল্লেখ্য, পিএমআই সূচকের ৫০-এর উপরে থাকার অর্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বৃদ্ধি। কম হলে সঙ্কোচন।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিতে কৃষির পাশাপাশি পরিষেবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে বলে জানাচ্ছেন প্রায় সব বিশেষজ্ঞই। তারই এ ভাবে ধাক্কা খাওয়া কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখছে। বিশেষত চাকরির ক্ষেত্রে। সমীক্ষা বলছে, চাহিদা কমায় গত মাসে পরিষেবা সংস্থাগুলির উপরে বরাত মেটানোর চাপ সে ভাবে ছিল না। ফলে তুলনায় কম কর্মী নিয়োগ করেছে তারা। সেই সংখ্যা এমনিতে বাড়লেও, বৃদ্ধির হার সাত মাসে সর্বনিম্ন। যা কাজের বাজারের উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরে না।
উল্টো দিকে ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে আশার বাণী শোনা গিয়েছে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংসের গলায়। তারা বলেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার হবে ৬.৪%। পরের দুই বছরে যথাক্রমে ৬.৪% এবং ৬.৯%। আর ২০২৬-২৭ সালে ৭%।
রেটিং সংস্থাটির মতে, অর্থনীতি কতটা এগোতে পারবে তা নির্ভর করবে উৎপাদন ক্ষেত্রের উপরে। আপাতত পরিষেবা ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে উৎপাদন ভিত্তিক অর্থনীতিতে পরিণত হওয়াই ভারতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সে জন্য জোর দিতে হবে সরবরাহ ব্যবস্থা মসৃণ করা, কর্মীদের দক্ষ করে তোলা, মহিলাদের আরও বেশি করে কাজে টেনে আনায়।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্স-এর ইকনমিক্স অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর পল্লিয়ানা দ্য লিমার অবশ্য মত, যে হারে পরিষেবা ক্ষেত্র বেড়েছে, তা আশাজনক। তার উপরে পরিষেবা প্রদানকারী এবং গ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে খরচ আট মাসে সবচেয়ে নীচে নামাও স্বস্তি দিচ্ছে এই ক্ষেত্রকে। আশা, এর হাত ধরে আগামী দিনে ভাল বৃদ্ধির মুখ দেখা যাবে।
প্রসঙ্গত পিএমআই সমীক্ষা আরও জানিয়েছে, উৎপাদন ও পরিষেবা মিলে গত মাসে কম্পোজ়িট পিএমআই আউটপুট সূচক নেমেছে ৫৭.৪-এ। সেটাও এক বছরে সর্বনিম্ন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)