Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Pension Scheme

পুরনো পেনশন প্রকল্প নিয়ে সতর্কবার্তা সুব্বারাওয়ের

গত ১৬ জানুয়ারি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রকাশিত ‘স্টেট ফিনান্সেস: আ স্টাডি অব বাজেটস অব ২০২২-২৩’ রিপোর্টও বলেছিল, পুরনো পেনশন প্রকল্প আগামী দিনে রাজ্যগুলির ঋণের বোঝা বাড়াতে পারে।

An image representing pension

পুরনো পেনশন ব্যবস্থা ফের চালু হলে দেশে সরকারি কর্মীদের মতো সমাজের একটি মাত্র অংশ উপকৃত হবে। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩৩
Share: Save:

সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন রাজ্য ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (এনপিএস) ছেড়ে ফিরে গিয়েছে পুরনো পেনশন প্রকল্পে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, নীতি আয়োগ-সহ অনেকেই এই নিয়ে আপত্তি তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশও দাবি করে, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়-সহ বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেস এই নীতি নিলেও অর্থনীতির উপরে তার বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে ভেবে দেখা জরুরি। বিশেষত এই ব্যবস্থায় যেহেতু পুরো টাকা সরকারকেই দিতে হয়। রাজ্যগুলির এই প্রবণতার প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের দাবি, পুরনো পেনশন ব্যবস্থা ফের চালু হলে দেশে সরকারি কর্মীদের মতো সমাজের একটি মাত্র অংশ উপকৃত হবে। আর স্বার্থহানি ঘটবে বহু সাধারণ মানুষের। যাঁদের অনেকের জন্যই সামাজিক সুরক্ষার কোনও উল্লেখযোগ্য প্রকল্প চালু নেই।

যে সব রাজ্য পুরনো পেনশন প্রকল্প ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বা আনার কথা বলছে তাদের উদ্দেশে সুব্বারাওয়ের বক্তব্য, এটা করা হলে রাজ্যগুলির উপরে অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপবে। তা আঘাত করবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সড়ক উন্নয়ন ও সেচের মতো জরুরি ক্ষেত্রগুলিকে। তাঁর কথায়, “সন্দেহ নেই, আর্থিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে আসা হবে এটি। আস্থা কমবে আর্থিক সংস্কারগুলি কার্যকর করার ক্ষেত্রেও।’’ আজ কেন্দ্র শর্তসাপেক্ষে কিছু কর্মীকে নতুন পেনশন ব্যবস্থা থেকে পুরনো পেনশন প্রকল্পে ফেরার এককালীন সুযোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সেই প্রেক্ষিতে সুব্বারাওয়ের এই বক্তব্য ফের চর্চায় উঠে এসেছে।

গত ১৬ জানুয়ারি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রকাশিত ‘স্টেট ফিনান্সেস: আ স্টাডি অব বাজেটস অব ২০২২-২৩’ রিপোর্টও বলেছিল, পুরনো পেনশন প্রকল্প আগামী দিনে রাজ্যগুলির ঋণের বোঝা বাড়াতে পারে। যা ঝুঁকিও বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যালের সাবধানবাণী ছিল, আগে থেকে আর্থিক সংস্থান না-করে পুরনো পেনশন প্রকল্পে ফিরলে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হবে। সুব্বারাও বলেছেন, নিশ্চিত পেনশনের সুযোগ পেয়ে সরকারি কর্মীরা এমনিতেইসুবিধাজনক জায়গা রয়েছেন। বৃহত্তর শ্রেণির মানুষের স্বার্থহানি করে তাঁদের সুবিধা আরও বাড়ানো শুধু অনৈতিক নয়, আর্থিক দিক দিয়েও ক্ষতির।

পুরনো পেনশন প্রকল্পে সরকারই বাজেট বরাদ্দ থেকে পেনশনের ব্যবস্থা করত। ২০০৩ সালে এনডিএ সরকারের আমলে তা বন্ধ হয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয় নতুন পেনশন প্রকল্প এনপিএস। পুরনো প্রকল্পে অবসরের পরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা শেষ বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন পেতেন। যা দিত কেন্দ্রীয় সরকারই। অর্থের ব্যবস্থা করা হত বাজেট ঘোষণার সময় আলাদা বরাদ্দ করে। নয়া পেনশন ব্যবস্থা এনপিএসে কর্মীদের মূল বেতন থেকে ১০% টাকা কেটে পেনশন তহবিলে রাখা হয়। এই তহবিলে সরকার জমা দেয় বেতনের ১৪%। তহবিলে যে টাকা জমা হয়, অবসর নেওয়ার পরে তা থেকে কমপক্ষে ৪০%। টাকা দিয়ে বাজার থেকে পেনশন প্রকল্প কিনে কর্মীকে সারা জীবনের জন্য নিজেকেই পেনশন হিসেবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।

২০০৪ সালে এনপিএস চালুর পরে প্রথমে এটি শুধু কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। পরে রাজ্যগুলিও তা অনুসরণ করে। রাজ্য হোক বা কেন্দ্র এনপিএসে সরকারের আর্থিক বোঝা কমে। কিন্তু সম্প্রতি কংগ্রেসশাসিত কিছু রাজ্য পুরনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়েছে, ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিছু। সেই প্রেক্ষিতে সুব্বারাওয়ের এই সতর্কবার্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE