শেখ ইজাজুর রহমান। —নিজস্ব চিত্র।
অতিমারি পরিস্থিতিতে বিশ্ব জুড়ে সঙ্কটাপন্ন অর্থনীতি। সেই আবহেও খড়্গপুর আইআইটির ক্যাম্পাসিংয়ে এ বার রেকর্ড সংখ্যক পড়ুয়া চাকরি পেয়েছেন। সর্বোচ্চ বেতনেও তৈরি হয়েছে রেকর্ড। সাত জন পড়ুয়া বার্ষিক ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরি পেয়েছেন। ভারতীয় একটি সংস্থাই নিয়োগ করেছে তাঁদের। সপ্ত-কৃতীর তালিকায় রয়েছেন মেদিনীপুরের এক ভূমিপুত্রও। আরেকটি ভারতীয় সংস্থায় খড়্গপুর আইআইটির আরও দুই পড়ুয়া পেয়েছেন বার্ষিক ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরি।
গত ১ ও ২ ডিসেম্বর অনলাইন ক্যাম্পাসিংয়ে ৫৬৩ জন চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। গুরগাঁওয়ের একটি শেয়ার ট্রেডিং সংস্থাই বার্ষিক ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বেতনে নিয়োগ করেছে সাত জনকে। সেই তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন শেখ ইজাজুর রহমান। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ভোগপুরের চাকদহ গ্রামে। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সের অন্তিম বর্ষের এই ছাত্র সফটওয়্যার ডেভেলপার পদে চাকরি পেয়েছেন। বাকি ছ’জন অর্ণব মাইতি, যশরাজ গুপ্ত, আনশুল গোয়েল, যশপরাগ বুটালা, দেবর্ষি চন্দ্রকান্ত পটেল ও অর্চিত আগরওয়াল। এঁদের সকলেই কম্পিউটার সায়েন্সের পড়ুয়া। খড়্গপুর আইআইটির রেজিস্ট্রার তমাল নাথ বলেন, ‘‘গত বছরেও বার্ষিক ১ কোটির উপরে বেতনে চাকরির সুযোগ ছিল না। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস হলেও আমাদের পঠনপাঠনে কোনও ফাঁক ছিল না। তাতেই এমন সাফল্য।’’
পড়ুয়ারা জানান, ‘কস্ট টু কোম্পানি’ নয়, হাতেই মিলবে বার্ষিক ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বেতন। একটি ভারতীয় সংস্থায় সাত জনের এমন চাকরির সুযোগ নিয়ে ক্যাম্পাসে চর্চা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আইআইটির কেরিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেলের চেয়ারম্যান এ রাজাকুমারের ব্যাখ্যা, ‘‘এত দিন করোনার জন্য সংস্থাগুলি উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ ধরে রেখেছিল। এখন সেই অবস্থা কাটছে।’’
আইআইটির ক্যাম্পাসিংয়ে হাতে গোনা ২০-২২ জন পড়ুয়া বাদে বাকিরা বছরে গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা বেতনের চাকরিই পান। সেখানে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার চাকরি পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ইজাজুর বলছিলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, আইআইটিতে পড়া মানেই কোটি টাকার চাকরি নয়। তাই হতাশ হলে চলবে না। আমিও ৩০ লক্ষের চাকরিই আশা করেছিলাম।’’ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ইজাজুর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামেরই দেরিয়াচক শ্রী অরবিন্দ বিদ্যাপীঠে পড়েছেন। নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত পড়েছেন তমলুকে হ্যামিল্টন হাইস্কুলে। ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়ে খড়্গপুর আইআইটিতে ভর্তি হন। প্রায় ৯.৫ সিজিপিএ পাওয়া ইজাজুরের বাবা শেখ ওয়াসেফউর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা আনোয়ারা বেগম গৃহবধূ। ছেলের সাফল্যে বেজায় খুশি তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy