বিঘ্নহীন ভাবে পেনশন পেতে প্রত্যেক বছর এক বার ব্যাঙ্কের শাখায় জীবন শংসাপত্র (লাইফ সার্টিফিকেট) জমা দিতে হয় পেনশন গ্রাহককে। তিনি যে জীবিত, প্রমাণ করতে হয় সেটাই। শাখায় গিয়ে নথি জমার সঙ্গে, মুখমণ্ডল সনাক্তকরণ (ফেস অথেন্টিকেশন) প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়িতে বসে ডিজিটাল জীবন শংসাপত্র জমার ব্যবস্থা করেছে ব্যাঙ্কগুলি। ব্যাঙ্কিং মহলের বক্তব্য, এতে সবচেয়ে সুরাহা হচ্ছে অসুস্থ ও চলাফেরায় অক্ষম প্রবীণদের। এই ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বুধবার দেশব্যাপী প্রচার কর্মসূচি শুরু হল। সূচনা করলেন কর্মিবর্গ এবং পেনশন প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। সারা মাস এই প্রচার চলবে।
অতীতে এই নথি দিতে ব্যাঙ্কের শাখায় যেতে হত পেনশন গ্রাহককে। কমন ফেসিলিটি সেন্টারগুলির মাধ্যমেও তা করা যায়। তবে ২০১৪সালের নভেম্বরে আধারভিত্তিক নথি জমার অনলাইন প্রযুক্তি (জীবন প্রমাণ) চালু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জিতেন্দ্র এ দিন বলেন, ‘‘প্রবীণদের সুবিধার জন্য এই প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। তাঁদের ব্যক্তিগত ভাবে হাজিরা দিয়ে জীবিত থাকার প্রমাণ দিতে বলা অমানবিক। তাই বায়োমেট্রিক তথ্য ও মুখমণ্ডল সনাক্তকরণ প্রযুক্তিকে এই কাজে লাগানো শুরু করেছে কেন্দ্র। সমাজকেও প্রযুক্তি নির্ভর করে তোলা যাচ্ছে। ভারতের এই উদ্যোগ নিয়ে অন্যান্য দেশও আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের অনেকে এই দেশ থেকে প্রক্রিয়াটি শিখতে চায়।’’ এই নিয়ে চার বছর নেটে জীবন শংসাপত্র জমায় উৎসাহ দিতে প্রচার চালাচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি। এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এ বছর প্রায় ২০০০ জেলা, শহর এবং মফস্সলে শিবির হবে। যোগ দেবে প্রথম সারির সমস্ত ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরের ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্ক (আইপিপিবি)।
এ দিন স্টেট ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, নেটে শংসাপত্র জমার জন্য দেশের বিভিন্ন শহরে শিবির শুরু করেছে তারাও। জিতেন্দ্রই তাদের কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন। প্রথম শিবিরে ৫০০টি ডিজিটাল জীবন শংসাপত্র জমা হয়েছে। ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, দেশে ১১৫টি শহরে ৫৭৫টি শাখায় এই শিবির করা হবে। এ ছাড়াও তা হবে এমন ২৪০০ শাখায়, যেগুলিতে পেনশন গ্রাহকের ন্যূনতম সংখ্যা ৩০০। শিবিরে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, স্মার্টফোনের সাহায্যে মুখের ছবি দিয়ে বাড়িতে বসেই শংসাপত্র জমা করা যাচ্ছে। আগের থেকে তা অনেক সুবিধাজনক।
অন্য দিকে, ডিজিটাল জীবন শংসাপত্র জমার জন্য কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড সংস্থার (ইপিএফও) সঙ্গে জোট বেঁধেছে আইপিপিবি। এই চুক্তির ফলে সারা দেশের ১.৬৫ লক্ষ ডাকঘর এবং ৩ লক্ষ ডাককর্মীর মাধ্যমে পিএফের পেনশনভোগীদের বাড়িতে গিয়ে জীবন শংসাপত্র জমা নেবে আইপিপিবি। এই পরিষেবা পেতে পেনশন গ্রাহকের টাকা লাগবে না। পরিকাঠামোর খরচ বইবে ইপিএফও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)