—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ড বাড়লেও, সংশয়ের মেঘ বস্ত্র শিল্পে।
উৎসবের মতোই বিয়ের মরসুমের দিকে তাকিয়ে থাকে গাড়ি থেকে পোশাক-সহ বিভিন্ন শিল্প। তখন বাড়তি চাহিদায় ভর করে খোলে অতিরিক্ত ব্যবসার সুযোগ। কোভিড কাটিয়ে বছর খানেক হল সেই বিক্রিবাটায় উন্নতির আভাস মিলেছিল। তবে বাস্তবে চাহিদা যে ছন্দে ফিরতে পারেনি, তা স্পষ্ট হল সমীক্ষায়। পোশাক তৈরির সংস্থাগুলির সংগঠন ক্লোদিং ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (সিএমএআই) দাবি, তাদের করা সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক ঝিমুনির কারণে চেপে বসা অনিশ্চয়তা ধাক্কা দিয়েছে সাম্প্রতিক বিয়ের মরসুমের (মে-জুনে) জামা-কাপড় বিক্রিতে। সেখানে ৮৩% সংস্থারই দাবি, গত বছরের একই মরসুমের নিরিখে এ বার ব্যবসা বাড়েনি। দামি পোশাকের চাহিদাতেও ভাটা।
সিএমএআইয়ের প্রেসিডেন্ট রাজেশ মাসান্দ বলেন, ‘‘এখনও বাজার ঝিমিয়ে। এটা মূল্যবৃদ্ধির কারণেই ঘটেছে। গত এপ্রিল-জুনের (চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিক) ব্যবসাও হতাশাজনক থাকার আশঙ্কা।’’ সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা রাহুল মেহতার বক্তব্য, বিয়ের মরসুমে শুধু বর-কনের দামি পোশাক বিক্রি বাড়ে না। বিভিন্ন বয়সের এবং বিভিন্ন ধরনের জামা-কাপড় বিকোয় বেশি। অর্থাৎ বর-কনের সঙ্গে তাঁদের পরিবার, আত্মীয়-বন্ধুদের পোশাকও এই বাজারের অংশ।
এই ব্যবসা বুঝতে ১১০টি পোশাক সংস্থার মধ্যে সমীক্ষাটি চালিয়েছিল সিএমএআই। তাতে ৭৭% জানিয়েছে, বিক্রিবাটা খারাপ ছিল। ৬০ শতাংশেরও বেশি এ জন্য আর্থিক ঝিমুনিকে দায়ী করেছে। ১৪ শতাংশের কাছে এর কারণ চড়া দাম। ১৩% অবশ্য মনে করছে, গত বারের তুলনায় এ বার মে-জুনে বিয়ের দিনের সংখ্যা কম থাকায় বিক্রি কমেছে।
গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৮৩ শতাংশই দাবি করেছে, ব্যবসা বাড়েনি। ৪০% বলেছে, গত বছরের থেকে বিক্রি কমেছে ১০-২৫ শতাংশ। আবার ৮৫ শতাংশের দাবি, কম দামি পোশাক তুলনায় কিছুটা বিকিয়েছে। ঠিক যেমন দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের বাজারে বেড়েছে সস্তা কিংবা কম পরিমাণে সাবান, শ্যাম্পু, বিস্কুট, চানাচুর ইত্যাদি কেনাকাটার ঝোঁক।
শিল্পমহলের হিসাবে, বস্ত্র শিল্প বার্ষিক ৮-১০ শতাংশ হারে বাড়ছিল। অতিমারি তাতে জল ঢালে। গত বছর ক্রেতারা ফের দোকান-বাজারমুখো হন এবং পরিসংখ্যানেও দেখা যায়, সার্বিক ভাবে ব্যবসা বৃদ্ধির হার ছুঁয়েছে ১৫-২০ শতাংশ। তবে তাদের মতে, একে তো সেটা হয়েছিল তার আগের বছরের নিচু ভিতের সঙ্গে তুলনায়। তার উপরে মূলত কাঁচামাল-সহ সার্বিক ভাবে উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধির কারণেও পণ্যের দাম বাড়ে। ফলে সব মিলিয়ে আয়ের নিরিখে বাড়ে ব্যবসার অঙ্ক। কিন্তু পণ্য বিক্রির পরিমাণ ধরলে গত বছরের ব্যবসা আসলে ৩-৫ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। ফলে কেন্দ্র অর্থনীতির চাকা ঘুরেছে দাবি করলেও, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে বলেই দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy