Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
Home Loan Rate

গৃহঋণও সঞ্চয়, অর্থসচিবকে বিঁধে বার্তা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর

বাজেটে আগের বিকল্প কর ব্যবস্থাটিকে প্রধান হিসেবে ঘোষণা করে বেশ কয়েকটি বিষয় বদলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এটি আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য।

A Photograph of  Former Union finance minister P Chidambaram

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৪
Share: Save:

বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, নতুন কর কাঠামো সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের ইচ্ছে কমিয়ে তাঁদের ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলে সমালোচনায় উত্তাল দেশ। কারণ এতে করের হার কিছুটা কমলেও, গৃহঋণ-সহ বেশ কিছু লগ্নি এবং সঞ্চয়ে পুরনো ব্যবস্থার মতো করছাড় নেই। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় অর্থসচিব টি ভি সোমনাথন বলেছেন, গৃহঋণ বা তার সুদের মতো বিষয়গুলি আসলে সঞ্চয়ের মধ্যে পড়েই না। ফলে পুরনো ব্যবস্থা সাধারণ মানুষকে সঞ্চয়ে উৎসাহ দিত, এটা বলা ঠিক নয়। তার পরেই টুইটে সোমনাথনের উদ্দেশে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের মন্তব্য, তিনি যেন গৃহঋণ নিয়ে তাঁর তত্ত্ব পুনর্বিবেচনা করেন। কারণ এটি প্রথম খরচ হিসাবে গণ্য হলেও, আদতে একটি সঞ্চয়। কারণ তা সম্পদ তৈরি করে।

Advertisement

বাজেটে আগের বিকল্প কর ব্যবস্থাটিকে প্রধান হিসেবে ঘোষণা করে বেশ কয়েকটি বিষয় বদলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁর দাবি, এটি আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য। কিন্তু কর বিশেষজ্ঞদের দাবি, করছাড়ের সুবিধা নেই বলে এতে নাম লেখালে অনেকেই সঞ্চয় বা লগ্নি করবেন না। যা ধাক্কা দেবে তাঁদের আর্থিক সুরক্ষায়। এমনকি গৃহঋণের চাহিদা কমবে বলেও আশঙ্কা একাংশের। এই পরিস্থিতিতে অর্থসচিব বলেছেন, ‘‘পুরনো কর ব্যবস্থা সঞ্চয়ে উৎসাহ দেয়, এই ধারণার সঙ্গে আমি সহমত নই। কারণটা সহজ। আপনি সেখানে করছাড়ের কাঠামোটা দেখলেই বুঝবেন, তার অর্ধেক সঞ্চয়ের জন্য এবং অর্ধেকটা গৃহঋণ বা তার সুদে খরচের জন্য।’’ তার প্রশ্ন, ‘‘আবাসন ঋণ কি সঞ্চয়?’’

টুইটে এরই জবাব দিতে নামেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। চিদম্বরমের মতে, অর্থসচিব মনে করেন না গৃহঋণ সঞ্চয়ের মধ্যে পড়ে। তবে তাঁর সঙ্গে কতজন একমত হবেন, সন্দেহ আছে। কারণ, গৃহঋণের সুদ বা ধার শোধের কিস্তি খরচ হলেও শেষে তা সম্পদে বদলে যায়। যেটাকে আখেরে সঞ্চয়ই বলে। তাঁর কথায়, ‘‘ধরুন আপনি ছুটি কাটাতে বা ঘোড়দৌড়ে একই টাকা খরচ করলেন, কিন্তু সেখানে শেষ পর্যন্ত কোনও সম্পদ তৈরি হবে না। ফলে গৃহঋণ সঞ্চয় নয়, এই তত্ত্ব অর্থসচিবের পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’’ সোমনাথন অবশ্য যুক্তি দিয়েছিলেন, নতুন কর ব্যবস্থা অন্য কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে জোর দেবে। সরকার চায় ফ্ল্যাট-বাড়ি, বিমা, পেনশন— সব কিছুই করুক দেশবাসী। বাজেটে সেই চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কর ব্যবস্থাকে সঞ্চয়ের উপযোগী হতে হবে, এমন কোনও কথা নেই।

সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে আয়কর কাঠামো এবং কিছু কিছু স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে বদল এনে মধ্যবিত্ত মানুষের মন জেতার ‘তাস’ খেলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া বাজেট পরবর্তী এক সাক্ষাৎকারে অর্থসচিব সোমনাথনের কথাতেও একই ইঙ্গিত। তাঁর দাবি, প্রবীণদের জমা প্রকল্প (সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কম) এবং মাসিক আয় প্রকল্পের মতো স্বল্প সঞ্চয়ে টাকা জমানোর ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে বয়স্ক মানুষ এবং মধ্যবিত্তদের সুরক্ষিত সরকারি প্রকল্পে বেশি টাকা সুবিধা দিতে চেয়েছে। যাতে তাঁরা ব্যাঙ্কের থেকে বেশি রিটার্ন পান। এই দু’টিতে এখন সুদের হার যথাক্রমে ৮% এবং ৭.১%।

Advertisement

অর্থসচিবের দাবি, টাকা জমানোর ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর ফলে সরকারের আর্থিক বোঝা বাড়বে। তবু সাধারণ মানুষের মঙ্গলের জন্য সেই চাপ স্বীকার করতে রাজি সরকার। কারণ, বিশেষ করে বয়স হলে মানুষ যে সঞ্চয় সুরক্ষিত করতে চায়, সেটা তাঁরা বোঝেন। তাঁর দাবি, ডাকঘরের মাসিক আয় প্রকল্পে লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা শেষ বার সংশোধিত হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। আর সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে তা স্থির হয় ২০০৪ সালে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.