রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর দুব্বুরি সুব্বারাওয়ের আত্মজীবনী ভোটের মুখে অস্বস্তিতে ফেলল কংগ্রেসকে। মঙ্গলবার সেই বইয়ের কিছু অংশ তুলে ধরেই বিরোধী শিবিরের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়েছে শাসকদল বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-র শাসনকালে প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং পি চিদম্বরমের অর্থ মন্ত্রক রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের উপরে সুদ কমাতে বা অর্থনীতির পরিস্থিতি ভাল দেখাতে চাপ দিত বলে বইয়ে যে দাবি করেছেন সুব্বারাও, তার থেকে স্পষ্ট প্রাচীন রাজনৈতিক দলটি কী ভাবে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে প্রতারণা করতে চাইত। আর এক মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের অভিযোগ, এ ভাবেই ইউপিএ জমানায় আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য দাবি একই অভিযোগ রয়েছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধেও। চড়া মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বকে কমিয়ে দেখানো কিংবা বিভ্রান্তিকর পরিসংখ্যান পেশ করে আর্থিক বৃদ্ধিকে বিপুল বাড়িয়ে দেখানোর অভিযোগ প্রায় নিয়মিত তোলে বিরোধী শিবির। এ বার শাসকদলের পাল্টা তিরে ভোটের বাজারে জোরালো হল তরজা।
সুব্বারাও তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন, প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং চিদম্বরম অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে সুদ কমানোর জন্য এবং মূল্যবৃদ্ধি ও আর্থিক বৃদ্ধির পরিসংখ্যানে ভারতীয় অর্থনীতির উজ্জ্বল ছবি তুলে ধরার জন্য চাপ দিতেন। তাই নিয়ে মতান্তর হত। ইউপিএ আমলে আরবিআইয়ের স্বাধীন শাসনের গুরুত্ব ছিল না বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এর আগে মোদী সরকারের বিরুদ্ধেও শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে। প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন আরবিআইয়ের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থের ভাগ পাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তে কেন্দ্রের নাক গলানোর অভিযোগ তোলেন। শীর্ষ ব্যাঙ্কের বারণ না মেনে প্রধানমন্ত্রী নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেও এক সময় বিস্তর চর্চা হয় দেশ জুড়ে। প্রসঙ্গত, সুব্বারাও ২০০৭-০৮ সালে ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব আর ২০০৮ থেকে পাঁচ বছরের জন্য সামলেছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের দায়িত্ব।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)