দেশ জুড়ে চর্চার কেন্দ্রে ভারতে অ্যাপলের আইফোন তৈরির সংস্থা তাইওয়ানের বৈদ্যুতিন বহুজাতিক ফক্সকন। সূত্রের খবর, গত দু’মাসে ভারতে তাদের বিভিন্ন কারখানা থেকে ৩০০ জনেরও বেশি চিনা কর্মীকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেছে সংস্থা। অধিকাংশ ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রযুক্তিবিদ। ফলে এ দেশে আইফোন তৈরির কাজ ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
একাংশ মনে করাচ্ছে, আমেরিকা-চিন শুল্ক যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই উৎপাদন শৃঙ্খল বিভিন্ন দেশে ছড়াচ্ছে আমেরিকার অ্যাপল। ফক্সকনের ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন চিনের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে তারা ভারতকেই আইফোন তৈরির অন্যতম ঘাঁটি করতে চাইছে। আইফোন সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় ফক্সকনের কারখানায়। তাই তারাও তাল মেলাতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য দেশে নতুন কারখানা গড়ছে। ফলে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন মহল। কার চাপে পড়ে ফক্সকন এমন সিদ্ধান্ত নিল? চিনের কি? ইচ্ছাকৃত ভাবেই কি বাধা তৈরি করা হল ভারতের আইফোন তৈরির অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠার পথে? একাংশের দাবি, এ ভাবে কি বেজিং সরাসরি নিশানা করল ভারতের পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র হওয়ার লক্ষ্যকে। কিছু সূত্রের ব্যাখ্যা, এটা ভারতের আন্তর্জাতিক জোগানশৃঙ্খল হওয়ার উদ্যোগে কালি ছেঁটানোর চেষ্টা হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চিনা কর্মী ফেরানোর প্রকৃত কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা-ধন্দ বহাল। মুখ খোলেনি ফক্সকন ও অ্যাপল। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন বিরোধীরা।
ভারতে ফক্সকনের কারখানায় তৈরি ‘আইফোন ১৭’ আমেরিকায় রফতানির পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি অ্যাপলকে ভর্ৎসনা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানান, এটা করলে সংস্থাকে ২৫% শুল্ক গুনতে হবে। একাংশের অনুমান, সেই ঘটনার সঙ্গেও ভারতে ফক্সকনের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে। অন্য অংশের বক্তব্য, কলকাঠি নেড়ে থাকতে পারে চিনই। দেশীয় মেধা এবং প্রযুক্তি অন্য দেশে সরার ক্ষেত্রে কড়া হচ্ছে বেজিং। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের প্রশ্ন, গোটা বিষয়ে কেন্দ্র নীরব কেন? ডোকলাম-গালওয়ানে সীমান্ত সংঘর্ষ সত্ত্বেও চিনা সংস্থা ও কর্মীদের ভারতে আসার রাস্তা মসৃণ করছে তারা। অথচ কর্মী ফিরিয়ে ভারতের উৎপাদনে ধাক্কা দিচ্ছে চিন।
এ দেশে ফক্সকন
কারখানা তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, গুজরাত, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে।
মার্চ-মে ভারত থেকে প্রায় ২৭,২০০ কোটি টাকার আইফোন রফতানি।
এর মধ্যে মে মাসেই প্রায় ৮৫০০ কোটির।
৯৭% আইফোন গিয়েছে আমেরিকায়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)