অর্থনীতির ডামাডোলের সময়ে সোনার দাম বাড়ছিল উল্কার বেগে। কিন্তু এখন ছবিটা পুরোপুরি উল্টো। গত তিন সপ্তাহে ধাতুটির দাম প্রায় ৭০০০ টাকা কমেছে। শুধু বৃহস্পতিবারই কমেছে প্রায় ২০০০ টাকা। গয়না শিল্প মহল জানাচ্ছে, দাম কমলেও এখনও বিক্রিবাটা তেমন বাড়েনি। সম্ভবত ক্রেতারা আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে চান।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ন মার্চেন্টস অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষিত দাম অনুযায়ী, কলকাতায় গত ২২ এপ্রিল সোনার দাম নজির গড়েছিল। খুচরো পাকা সোনা (১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট) হয়েছিল ৯৯,৫০০ টাকা। জিএসটি ধরে পৌঁছেছিল ১,০২,৪৮৫ টাকায়। একই দিনে গয়নার সোনা (১০ গ্রাম ২২ ক্যারাট) ৯৪,৫৫০ টাকা হয়েছিল। কর ধরে ৯৭,৩৮৬ টাকা। আর এ দিন এই দুই শ্রেণি সোনার দাম নেমে এসেছে যথাক্রমে ৯২,৫৫০ টাকা এবং ৮৮,০০০ টাকায়। জিএসটি ধরে যথাক্রমে ৯৫,৩২৬.৫০ টাকা এবং ৯০,৫৪০ টাকা। এ দিন বিশ্ব বাজারে আউন্স প্রতি ২৫ ক্যারাট সোনা ছিল ৩১৮০ ডলার। গত তিন সপ্তাহে প্রায় ৩২০ কোটি ডলার কমেছে।
তবে স্বর্ণ শিল্প মহল মনে করছে দাম আরও কমবে। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে বলেন, ‘‘দাম আরও কিছুটা কমবে বলেই আমার মনে হয়। বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ভারত এবং চিনের প্রাথমিক বোঝাপড়া দাম কমার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছে। তবে ৯০ দিনের মেয়াদের পরে শুল্ক চুক্তি কোন পথে গড়ায়, তার উপরে সোনার দামের প্রবণতা নির্ভর করবে সেই সময়ে।’’ অঙ্কুরহাটি জেম অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের সভাপতি অশোক বেঙ্গানি বলেন, ‘‘সোনার দামে আরও কিছুটা সংশোধন হবে। তার পরই দামে স্থায়িত্ব আসবে’’
এ দিকে দাম এতটা কমা সত্ত্বেও গয়নার বাজারে কেনাকাটি থমকে। বড়-ছোট সব দোকানেই। সমর বলছেন, ‘‘দাম আরও কিছুটা কমে কি না, তা দেখে ক্রেতারা বাজারমুখো হবেন বলে আমার ধারণা। তবে এটা নতুন কিছু নয়। যখনই দাম বাড়তে অথবা কমতে থাকে, তখনই গয়নার বাজার কিছুটা থমকে যায়। দাম কমার অপেক্ষা করেন ক্রেতারা।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)