খুচরোর বদলে কেউ যদি চাল, ডাল, মুড়ির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের প্যাকেট কিনে ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হন, তা হলে তাঁর সংসার খরচ বাড়ছে। কারণ, আজ থেকে প্যাকেটবন্দি এবং লেবেল সাঁটা সমস্ত খাবারের জিনিসে জিএসটি বসছে। এত দিন যেগুলিতে কর ছাড় ছিল। চড়া করের আওতায় ঢুকছে হোটেলের হাজার টাকার কম দামি ঘর এবং ব্যাঙ্কের চেকবই-ও। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, এমনিতেই সাধারণ রোজগেরে গৃহস্থ খাদ্যপণ্য, জ্বালানি-সহ সব কিছুর বর্ধিত দামে বিপর্যস্ত। এই অবস্থায় জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত তাঁদের স্বার্থের পরিপন্থী।
অনেকগুলিতে আজ থেকে জিএসটির সংশোধিত হারও চালু হচ্ছে। ফলে বাড়ছে কর। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পড়াশোনার জন্য জরুরি কিছু জিনিস। যেমন, কালি, শার্পনার ইত্যাদি। কর বাড়ায় ছুরি, ব্লেড, পাম্প, ছাপার কালি, এলইডি আলো, বিদ্যুৎচালিত পাম্প, টেটরা প্যাক এবং সোলার ওয়াটার হিটারেরও দাম বাড়বে। গত মাসে জিএসটি পরিষদের বৈঠকে কর ছাড়ের তালিকা ছাঁটা এবং বেশ কিছু পণ্যে তার হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। জিএসটির হার কমার তালিকাও একটি রয়েছে, তবে তার সংখ্যা হাতে গোনা।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, কেন্দ্র দাবি করে আয়করের জাল সম্প্রসারিত হয়েছে। বাস্তবে সিংহভাগই কর দেন না। সেই খাতে রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি মেটানো হচ্ছে জিএসটি বাড়িয়ে। অনেক ক্ষেত্রেই অযৌক্তিক ভাবে। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সরকার সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা ভাবলে কর্পোরেট করের হার কমিয়ে মুড়ির মতো জিনিসের কর বাড়াতো না। আশ্চর্য ব্যাপার।’’ জিএসটি-র হার বৃদ্ধি মূল্যবৃদ্ধিকে আরও তুলে দিতে পারে, হুঁশিয়ারি আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের।
অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ীদের অনেকেও। তাঁদের সংগঠন সিডব্লিউবিটিএ-র সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন, “জিএসটি চালুর সময়ে পণ্যের দাম কমবে বলেছিল মোদী সরকার। বাস্তবে বাড়ছে। ১০০০টি সংশোধন হয়েছে আইনে।’’ ওই সংগঠনেরই কর কমিটির আহ্বায়ক যতনলাল বারডিয়া বলেন, “কেন্দ্র দাবি করলেও, জিএসটি ব্যবস্থা মোটেই সরল নয়। করের হিসাবরক্ষার পাশপাশি তা মেটানোও খরচসাপেক্ষ।’’