উত্তরাধিকারসূত্রে অনেকেই সোনার গয়না পেয়ে থাকেন। তার উপর কী হারে ধার্য হয় আয়কর? সংশ্লিষ্ট অলঙ্কার বিক্রির সময়ে কতটা কর নিয়ে থাকে সরকার? আমজনতার অনেকেরই জানা নেই এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব। ফলে আয়কর জমা করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়েন তাঁরা। আর তাই আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল স্বর্ণালঙ্কারের কর সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের জবাব।
ভারতের আইন অনুযায়ী, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া ‘হলুদ ধাতু’র গয়নায় নেই কোনও আয়কর। সংশ্লিষ্ট অলঙ্কারকে করদাতার ব্যক্তিগত আয় হিসাবে গণ্য করা হয় না। শুধু তা-ই নয়, উইল, উপহার দলিল বা উত্তরাধিকার শংসাপত্রের মাধ্যমে যাঁরা সোনার গয়না পেয়েছেন বা পাচ্ছেন, তাঁদেরও কোনও কর দিতে হবে না। যদিও এই ধরনের নথিগুলিকে যত্ন করে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
উল্লেখ্য, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া ‘হলুদ ধাতু’র অলঙ্কার বিক্রি করার আইনগত অধিকার রয়েছে মালিকের। সে ক্ষেত্রে উইল, উপহার দলিল এবং উত্তরাধিকার শংসাপত্রের মতো নথির প্রয়োজন হতে পারে। পাশাপাশি, বিক্রি করা সোনার গয়না থেকে প্রাপ্ত অর্থের উপরে কর নিয়ে থাকে সরকার। যদি কোনও ব্যক্তি ‘হলুদ ধাতু’ মজুত থাকার তিন বছর পর বিক্রি করেন, তা হলে সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ ‘দীর্ঘমেয়াদি মূলধন লাভ’ (লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইনস্) হিসাবে গণ্য হবে।
কিন্তু গ্রাহক সোনা কেনার তিন বছরের মধ্যে তা বিক্রি করলে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। সে ক্ষেত্রে লভ্যাংশ ব্যক্তিগত আয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। সরকারি খাতায় এর নাম ‘স্বল্পমেয়াদি মূলধন লাভ’ (শর্ট টার্ম ক্যাপিটাল গেইন্স)। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর প্রযোজ্য করের স্ল্যাবের উপর ভিত্তি করে কর নেবে আয়কর দফতর।
এ দেশের বিয়ের সময়ে স্বর্ণালঙ্কার উপহার দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। ওই গয়নার উপরেও কোনও কর নেয় না সরকার। ‘সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস’-এর (সিবিডিটি) নিয়ম অনুযায়ী, একজন বিবাহিত মহিলা নিজের কাছে সর্বোচ্চ ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনা রাখতে পারেন। অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ২৫০ গ্রাম। পরিবারের পুরুষ সদস্যেরা ১০০ গ্রাম পর্যন্ত হলুদ ধাতু রাখার অধিকারী।
আরও পড়ুন:
সরকারি নিয়মে এটাও বলা রয়েছে যে, নাগরিকদের কাছে সোনা সংক্রান্ত বৈধ নথি থাকতে হবে। তবে বাড়িতে নির্দিষ্ট পরিমাণে হলুদ ধাতু থাকলে তল্লাশির সময়ে সরকারি আধিকারিক ইচ্ছা করলেই তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন না।