লাদাখে সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে দেশে চিনা পণ্য বয়কটের আহ্বান তীব্র হয়েছে। চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে একাধিক সংগঠন। সরাসরি বয়কটের কথা না-বললেও দেশীয় পণ্যের ব্যবহারে জোর দেওয়ার ইঙ্গিত করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন চিনা পণ্যের উপর নজরদারি এবং আমদানি শুল্ক বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এই আবহে রক্তচাপ বাড়ছে শিল্প মহলের একাংশের। তাদের বক্তব্য, ‘আত্মনির্ভরতা’ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার জন্য সময় দরকার। এই মুহূর্তে যদি কাঁচামালের আমদানিতে সমস্যা হয়, তা হলে উল্টে ধাক্কা খাবে দেশীয় শিল্পই। বিশেষ করে লকডাউন শিথিল হওয়ার পর যখন তা ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ শিল্পের সংগঠন অ্যাকমার বক্তব্য, তাদের যে সব কাঁচামাল লাগে তার বেশিরভাগই দেশে তৈরি হয়। কিন্তু যতটুকুর জন্য চিনের উপরে নির্ভর করতে হয়, সেগুলি ছাড়া গাড়ি তৈরি করাই অসম্ভব। সংগঠন দু’টির আরও বক্তব্য, খুব কম সময়ের মধ্যে বিএস-৪ থেকে বিএস-৬ দূষণ বিধির গাড়ি তৈরি করতে হচ্ছে তাদের। তার জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ এখনই এ দেশে তৈরি করা সম্ভব নয়।
সিয়ামের প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরা ও অ্যাকমার প্রেসিডেন্ট দীপক জৈনের বক্তব্য, বেহাল গাড়ি শিল্পকে বাঁচাতে এখন আর কোনও ধরনের প্রতিকূল অবস্থা কাম্য নয়। আবার ভোগ্যপণ্য নির্মাতাদের সংগঠন সিয়ামার কর্তা কমল নন্দী জানান, ৯৫% ভোগ্যপণ্য দেশে তৈরি হলেও বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে ২৫-৭০% কাঁচামালের জন্য চিনের উপর নির্ভর করতে হয়। যা রাতারাতি এখানে তৈরি করা যাবে না। শিল্পের একাংশের আরও অভিযোগ, বিভিন্ন স্থলবন্দর ও বিমানবন্দরে চিন এবং হংকং থেকে আসা সব পণ্য খতিয়ে দেখার ফলে সমস্ত কাঁচামালই হাতে পেতে দেরি হচ্ছে। রফতানিকারীদের সংগঠন ফিয়োর ডিজি অজয় সহায় বলেন, ‘‘দেশীয় সংস্থার আমদানি করা কাঁচামালের দ্রুত ছাড়পত্র দরকার।’’ পোশাক রফতানিকারীদের সংগঠন এইপিসি-র এ শক্তিভেলও বলছেন, ‘‘কাঁচামাল পেতে হাতে দেরি হলে আর্থিক ক্ষতি হবে।’’