ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি এবং আমদানি শুল্ক ঠিক হবে বৈঠকের মাধ্যমে। সেই বৈঠকে যোগ দিতে ইতিমধ্যে ওয়াশিংটনে পৌঁছে গিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। কিন্তু তারই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যথারীতি অনর্গল। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, তাঁর দিক থেকে কোনও তাড়া নেই। তবে ভারত আমেরিকার পণ্যের আমদানি শুল্ক শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনতে রাজি। যে কথা ঠিক দু’দিন আগেও বলেছেন তিনি। তাতে অস্বস্তিতে পড়েছিল মোদী সরকার। কেন্দ্রের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিরোধীরা। দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে হবে। যদিও এর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ভারত চায় (বাণিজ্য চুক্তি)। তারা অন্যতম উঁচু শুল্কের দেশ। তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করা প্রায় অসম্ভব। আপনি কি জানেন, এই পরিস্থিতিতে তারা আমেরিকার পণ্যের শুল্ক ১০০% কমাতে রাজি? হ্যাঁ, শীঘ্রই তা হবে। আমার কোনও তাড়া নেই।’’ ট্রাম্পের দাবি, সব দেশই তাঁদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়াও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও তাঁর পক্ষে ব্যক্তিগত ভাবে প্রায় ১৫০টি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, ভারত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পরেও ট্রাম্পের এই ‘আত্মবিশ্বাসের’ কারণ কী? গত চার বছর ধরে আমেরিকা ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী। ২০২৪ সালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অঙ্ক ছিল ১২,৯০০ কোটি ডলার। যেখানে ভারতের উদ্বৃত্ত ছিল ৪৫৭০ কোটি। ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যের অঙ্ককে ৫০,০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে চাইছে দিল্লি। সে ক্ষেত্রে ভারতের রফতানিও উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়বে। ফলে ভারত চুক্তি নিয়ে আগ্রহী।
গত বৃহস্পতিবার অ্যাপলের লগ্নি নিয়েও ভারতের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, তিনি অ্যাপলের সিইও টিম কুকের সিদ্ধান্তে বিরক্ত। ভারতে অ্যাপলের কারখানা গড়া উচিত নয়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)