Advertisement
E-Paper

মালদহ সীমান্তে মার খাচ্ছে বাংলাদেশে রফতানি

সদ্য শেষ করা বাংলাদেশ সফরে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর, তাঁর দেশে ফেরার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই বেহাল পরিকাঠামোর জেরে সীমান্ত বাণিজ্য মার খাওয়ার অভিযোগ উঠল। ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র দিয়ে আগের বছরের থেকে বাংলাদেশে রফতানি কমেছে।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০৪:০৮

সদ্য শেষ করা বাংলাদেশ সফরে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর, তাঁর দেশে ফেরার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই বেহাল পরিকাঠামোর জেরে সীমান্ত বাণিজ্য মার খাওয়ার অভিযোগ উঠল। ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র দিয়ে আগের বছরের থেকে বাংলাদেশে রফতানি কমেছে। প্রায় ৪০০ কোটি টাকার এই রফতানি কমার জন্য বাংলাদেশের সোনা মসজিদ পানামা বন্দরের পরিকাঠামোর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রফতানিকারীরা।

রবিবার মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ভারত-বাংলাদেশের রফতানি ও আমদানিকারীদের নিয়ে বৈঠকে ওপার বাংলার বন্দরের পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন রফতানিকারীরা। তবে সমস্যার কথা মেনে নিয়ে পরিকাঠামো দ্রুত উন্নত করার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীর কুমার শীল। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যা মেটানোর জন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁরা এ নিয়ে আশ্বাসও দিয়েছেন।’’

মহদিপুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রফতানি বাড়াতে তৎপর দু’দেশই। এ ক্ষেত্রে সমস্যা কাটানোর লক্ষ্যে ডাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সোনা মসজিদ পানামা বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীর বাবু, দফতরের প্রশাসনিক ম্যানেজার মাইনু ইসলাম-সহ আমদানিকারী সংস্থার সভাপতি কবিরুর রহমান, সম্পাদক মহম্মদ আবু তালেব, শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাদিকুল ইসলাম প্রমুখ। পশ্চিমবঙ্গের তরফে উপস্থিত ছিলেন মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রামচন্দ্র ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ ফজলু হক। অ্যাসোসিয়শনের অভিযোগ, পানামা বন্দরে পরিকাঠামোর উন্নয়ন না-হওয়ায় রফতানি কম হচ্ছে। বাংলাদেশে আমদানিকারীরাও লোকসানের মুখে পড়ছে। ওই সূত্রের খবর, ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে এই সীমান্ত দিয়ে রফতানি হয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার পণ্য। ২০১৪-’১৫ সালে ১০% বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। কিন্তু রফতানি হয়েছে মাত্র ১,৬০০ কোটির। ফলে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার রফতানি মার খেয়েছে। রফতানিকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে দৈনিক ৫০০/৬০০ ট্রাক যাতায়াত করে। তবে পানামা বন্দরে ২০০-৩০০-র বেশি ট্রাক রাখা যায় না। ফলে ওপার বাংলায় গিয়ে পণ্য খালাস করতে একটি গাড়ির সপ্তাহখানেক সময় লাগে বলে অভিযোগ। পাথর, ছাই এর ক্ষেত্রে অসুবিধে না-হলেও পেঁয়াজ, ফল জাতীয় পচনশীল সামগ্রীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। পানামা বন্দরে বৃষ্টি হলেই কাদা জমে যায়। ফলে গাড়ির চাকা আটকে গিয়ে যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়। এ ছাড়া বন্দরে কোনও শেড নেই। বৃষ্টির সময়ে পচনশীল পণ্য নিয়ে সমস্যায় পড়েন চালকেরা। গুদামেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। চালক, সহকারী চালকদের থাকার জায়গাও নেই। দিনের পর দিন তাঁদের খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হয়। পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরেও সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে পণ্য খালাস করার জন্য কর্মী পাওয়া যায় না ওই বন্দরে।

এই সব অভিযোগ জানিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাম চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘সমস্যার কথা ওপার বাংলার কর্তাদের জানানো হয়েছে। অ্যাসোসিয়শনের সদস্য সমীর ঘোষ নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক সময়ে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন চালক, সহকারী চালকেরা। আমাদের গাড়ি থেকে বেআইনি ভাবে পণ্য নামিয়ে নেয় তারা। পানামা বন্দরের জিএম প্রবীর বাবু বলেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে আমদানি- রফতানি বাড়াতে আমরাও তৎপর। চেষ্টা করছি যাতে খুব কম সময়ের মধ্যে ট্রাকগুলির পণ্য খালাস করে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া যায়।’’

abhijit saha malda border indo bangla border trade border trade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy