ঢিমেতালেই চলছে বিশ্ব অর্থনীতি। মন্দার জের পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি শিল্পোন্নত দুনিয়াও। বাড়ছে জনসংখ্যাও। তবে তারই মধ্যে কিছুটা কমেছে চরম দারিদ্রের প্রকোপ। বিশ্বব্যাঙ্ক তার সমীক্ষায় এই দাবি করেছে। আর, এর জন্য তারা বিশেষ করে চিন, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের মতো দেশকে কৃতিত্ব দিয়েছে। তবে পাশাপাশি তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সকলে আর্থিক উন্নয়নের সমান ভাগীদার নন। কারণ, গত ২০১৩ সাল পর্যন্ত ২৫ বছরে বে়ড়েছে আয়ে বৈষম্য।
বিশ্বব্যাঙ্ক তার রিপোর্ট ‘দারিদ্র এবং উন্নয়নের সুফল ভাগাভাগি’ শীর্ষক রিপোর্টে এই দাবি করে জানিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে ১০ কোটিরও বেশি। গত ২০১৩ সালে যেখানে দারিদ্রের জ্বালা সহ্য করতে হয়েছিল ৭৬ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষকে, সেখানে তার এক বছর আগেই ওই সংখ্যা ছিল ৮৮ কোটি ১০ লক্ষ। এখানে দারিদ্রসীমা ধরা হয়েছে আন্তর্জাতিক মাপকাঠি মেনে। সেই অনুযায়ী দিনে ১.৯০ ডলার বা ১২৭.৩০ টাকার থেকেও কম খরচে যাঁরা কোনও মতে দিন গুজরান করতে বাধ্য হন, তাঁদেরই দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
১৯৯০ সালের তুলনাতেও ২০১৩-এ দরিদ্র মানুষের সংখ্যা সারা বিশ্বে কমেছে ১১০ কোটি। জনসংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই বিপোর্ট। বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বিশ্ব অর্থনীতির উপর জমে থাকা মন্দার মেঘ এখনও কাটেনি। তা সত্ত্বেও এটা সম্ভব হয়েছে পূর্ব এশীয় ও এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির উন্নয়নে ভর করে। এ প্রসঙ্গে তারা বলেছে, এই তালিকাতেই আছে চিন, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত।
২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্রকে পর্যুদস্ত করার যে-লক্ষ্যমাত্রা রাষ্ট্রপুঞ্জ বেঁধে দিয়েছে, দারিদ্র কমার এই প্রবণতা বিশ্বকে সে দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাঙ্ক। কিন্তু ওই লক্ষ্যের আওতায় অসাম্য দূর করার কথাও বলা হয়েছে। আর, তাদের আশঙ্কা এখানেই ছবিটা এখনও তেমন উজ্জ্বল নয়। কারণ, সহারা মরুভূমি সংলগ্ন আফ্রিকার দেশগুলিতেই এখনও বাস করেন চরম দারিদ্রে থাকা বিশ্বের মোট মানুষের অর্ধেক। দক্ষিণ এশিয়ায় রয়েছে বিশ্বের দরিদ্র জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ।
বিশ্বব্যাঙ্কের উন্নয়ন সংক্রান্ত গবেষণা বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভাইজর ফ্রান্সিসকো ফেরেইরা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ২০৩০-এর মধ্যে দারিদ্র মুছে ফেলাকে পাখির চোখ করে এগোতে হলে দূর করতে হবে অসাম্যকে। আর, তার একমাত্র হাতিয়ার উন্নয়নের সুফল সকলের নাগালে পৌঁছে দেওয়া, যাতে প্রত্যন্ত প্রান্তে বাস করা মানুষটিও তার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত না হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy