প্রতীকী ছবি।
শুধু বাড়তে থাকা সংক্রমণে রক্ষে নেই। অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তেড়েফুঁড়ে মাথা তুলল পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান জানাল, মার্চে পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসেব করা ওই হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এক লাফে উঠেছে ৭.৩৯ শতাংশে। আট বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে যা সব থেকে চড়া। এর আগে ২০১২ সালের অক্টোবরে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ছুঁয়েছিল ৭.৪%। মার্চে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও ছিল চার মাসে সর্বোচ্চ, ৫.৫২%।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, পাইকারি বাজারে এ ভাবে পণ্যের দাম বাড়লে খুচরো বাজারেও তার প্রভাব পড়বে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের চিন্তার কারণ রয়েই যাচ্ছে। বিশেষত এর অন্যতম কারণ যেখানে বিশ্ব বাজারের চড়া অশোধিত তেল এবং দেশের বাজারের আগুন পেট্রল, ডিজেল। তাঁদের মতে, জ্বালানির খরচ বাড়ায় উৎপাদন এবং পরিবহণ খরচ ইতিমধ্যেই অনেক চড়েছে। তার উপর ফের করোনার সংক্রমণ বাড়ায় মহারাষ্ট্র-সহ বেশ কিছু রাজ্যে স্থানীয় লকডাউন করতে হচ্ছে। এই বিধিনিষেধের জেরে গত বছর অতিমারির প্রথম দফার মতো এ বারেও জোগান-শৃঙ্খল ধাক্কা খেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাইকারি এবং খুচরো, দুই বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির হার আরও বাড়ার আশঙ্কা।
কেন্দ্র অবশ্য মনে করাচ্ছে, গত বছর মার্চে দেশে শুরু হয়েছিল লকডাউন। ফলে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার প্রকাশের সময় অল্প সংখ্যক ব্যবসায়ীর উপরে সমীক্ষার সুযোগ মিলেছিল। যে কারণে মূল্যবৃদ্ধির হারও ছিল কম, মাত্র ০.৪২%। সেই নিচু ভিতের উপর এ বারের হিসেব এত বেশি লাগছে।
উপদেষ্টা সংস্থা ইক্রার প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ারের দাবি, করোনার প্রতিষেধক বাজারে আসার পরে চাহিদা বাড়ায় ধাতু, বস্ত্র, রাসায়নিক, রাবারের মতো পণ্যের দাম বেড়েছে বিশ্ব বাজারে। দেশের পাইকারি বাজারে তারই প্রভাব স্পষ্ট। তবে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম কমায় আমদানির খরচ বৃদ্ধির চাপও পড়েছে। ইক্রার আশঙ্কা, আগামী দু’মাসে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছতে পারে ১১-১১.৫ শতাংশে।
অবশ্য আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে সুদের হার কমানো দরকার হলেও, পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি এবং তার জেরে চড়তে থাকা খুচরো মূল্যবৃদ্ধি সেই জায়গা ছাড়বে না, আশঙ্কা অদিতির। একই মত ইন্ডিয়া রেটিংসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র কুমার পন্তেরও। তিনি বলেন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কাজটা আরও কঠিন হল। কারণ, পাইকারি বাজারের প্রভাব কিছুটা খুচরো বাজারে পড়বেই। তাঁর ধারণা, সুদের হার এখন আর কমবে না। বরং চলতি অর্থবর্ষের শেষে নগদের জোগান বাড়ানোর বহু পদক্ষেপকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy