E-Paper

শিক্ষায় আরও বেশি করে এআই কাজে লাগানো হোক, ডাক ইনফোকমের মঞ্চ থেকে

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলছে প্রযুক্তি কিংবা মোবাইল ফোনের মতো যন্ত্র ব্যবহার না করতে। পড়ুয়ারা কিন্তু যথেষ্ট সপ্রতিভ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৯
জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শনিবার শেষ হল ইনফোকম।

জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শনিবার শেষ হল ইনফোকম। নিজস্ব চিত্র।

নব্বইয়ের দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কাঠামোর সঙ্গে আজকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কোনও পার্থক্য বোঝা যায় কি? বিশ্ব ও প্রযুক্তি যে জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, তার কোনও প্রভাব কি পরীক্ষা ব্যবস্থায় পড়েছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উত্তর হবে, ‘না’। শিক্ষাব্যবস্থার এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রযুক্তি শিক্ষাবিদ কে আর ভি রাজা সুব্রমনিয়ন। এবিপি গোষ্ঠী আয়োজিত তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলন ইনফোকমের মঞ্চ থেকে তাঁর পরামর্শ, প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও গতিশীল হোক। ছুঁতে চেষ্টা করুক বদলে যাওয়া বিশ্বকে। কারণ, কাজের বাজারের চাহিদা পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে। এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করলে এই ব্যবধান আরও বাড়বে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলছে প্রযুক্তি কিংবা মোবাইল ফোনের মতো যন্ত্র ব্যবহার না করতে। পড়ুয়ারা কিন্তু যথেষ্ট সপ্রতিভ। ক্লাস থেকে বার হয়েই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে আরও ভাল ভাবে পড়া বুঝে নিচ্ছে তাদের অনেকে। ইন্টারনেটে ভিডিয়ো দেখে ক্লাসঘর কিংবা পরীক্ষাগারের চেয়েও স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারছে বিষয়বস্তু। তা হলে এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে কেন এত রক্ষণশীলতা? প্রশ্ন তুলেছেন সুব্রমনিয়ন। মনে করিয়ে দিয়েছেন, একটা সময় ক্যালকুলেটর নিয়েও উচ্চশিক্ষা স্তরে রক্ষণশীলতা ছিল। তা অবশ্য এখন অতীত। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্যা প্রযুক্তি কিংবা পরিকাঠামোয় নয়। মানসিকতায়। শিক্ষায় এআই-এর ইতিবাচক দিককে কাজে লাগাতে হবে। যাতে পড়ুয়াদের ভাল ভাবে প্রশিক্ষিত এবং কাজের যোগ্য করে গড়ে তোলা যায়।’’

তবে সুব্রমনিয়ন মনে করিয়ে দিয়েছেন, এআই ব্যবহার করলে তার নৈতিক-অনৈতিক দিকগুলি নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে। তার দায়িত্ব নিতে হবে প্রতিষ্ঠানকে। এআই নিজেও সেই ভাবে নিজেকে উন্নত করছে। অতীতে কোনও বিষয়ে গবেষণাপত্র বা ‘হোম অ্যাসাইনমেন্ট’ তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশ দিলে এআই নির্ভর চ্যাটবট তা এক কথায় করে দিত। এখন কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাখ্যান করে।

অন্য এক আলোচনাচক্রে সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ৬৩স্যাটসের এমডি-সিইও নীহার পাথারের বক্তব্য, দু’বছর আগে পর্যন্ত চ্যাটবটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এআই। এখন গোটা প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গিয়েছে। সে কারণে বিদ্যালয় স্তর থেকেই সাইবার নিরাপত্তার ব্যাপারে পড়ুয়াদের অল্প অল্প করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। আর এক সভায় খড়্গপুর আইআইটি-র অধিকর্তা সুমন চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন, ‘‘এখন এআই জানা থাকলে অতিরিক্ত সুবিধা মিলছে ঠিকই, কিন্তু বছর তিনেকের মধ্যে ব্যাপারটা এত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে মনে হয় না। এখন যেমন কম্পিউটার জানাটা সাধারণ বিষয় হয়ে গিয়েছে, এআই-এর ক্ষেত্রেও তেমনই হবে।’’ পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, ‘‘পরীক্ষা নির্ভর শিক্ষার কারণে আমাদের মধ্যে উদ্ভাবন ক্ষমতা কমে গিয়েছে। মনে রাখতে হবে, মানবতার স্বার্থে উদ্ভাবন ক্ষমতার বৃদ্ধি জরুরি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Infocom Artificial Intelligence

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy