এন আর নারায়ণমূর্তি।
বিভিন্ন নতুন সংস্থার (স্টার্ট-আপ) বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে টাকা তোলার (আইপিও) প্রবণতা নিয়ে কড়া সমালোচনা করলেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাএন আর নারায়ণমূর্তি। তাঁর বার্তা, এ ভাবে শেয়ার বিক্রিকে শুধু ব্যবসার পরের ধাপের টাকা জোগাড়ের পথ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই মানসিকতা ঠিক নয়। কারণ, আইপিও ছাড়লেই সংস্থার ঘাড়ে যে বিরাট দায়িত্ব এসে পড়ে, সেই কথা মনে রাখা জরুরি। সেই দায়িত্ব সংস্থার লগ্নিকারী ও দেশের আর্থিক ব্যবস্থার প্রতি। গত ক’বছরে ভারতে একাধিক নতুন সংস্থা আইপিও মারফত তহবিল তুলেছে। সেই প্রেক্ষিতে মূর্তির মন্তব্য সতর্কবার্তা বলেও ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।
সাধারণত স্টার্ট-আপগুলি ব্যবসা শুরুর সময় মূলধন সংগ্রহ করে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থার থেকে। কিন্তু ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলি কয়েক বছর পরে পুঁজি তুলে নিতে চায়। সাধারণত সেই টাকা ফেরাতেই ছাড়া হয় আইপিও। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, হালে বহু স্টার্ট-আপ আইপিও-তে যে দামে শেয়ার বেচেছে, পরে তা ধরে রাখতে পারেনি। ৭৫% কমেছে, এমন নজিরও আছে। মূর্তির মতে, আইপিও-তে শেয়ারে দাম নির্ধারণ করা উচিত ভবিষ্যতের বাজার সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন করে। কিন্তু ভারতে সেটা দক্ষ ভাবে করার মতো মূল্যায়ন সংস্থার অভাব রয়েছে। তাঁর কথায়, “আইপিও-কে শুধু ব্যবসার মূলধন সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে দেখা ভুল। লগ্নিকারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাঁদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। যে সব সংস্থা আইপিও ছাড়ে তাদের বিরাট দায়িত্ব। বহু কম পুঁজির মানুষও শেয়ার কেনেন। সংস্থার নৈতিক দায়িত্ব তাঁদের উপযুক্ত রিটার্ন দেওয়ার ব্যবস্থা করা।’’
মূর্তিকে সমর্থন করছেন বাজার বিশেষজ্ঞেরা। বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের এমডি অজিত খণ্ডেলওয়াল বলেন, “শেয়ারে লগ্নি ঝুঁকির ঠিকই। কিন্তু সংস্থাগুলিরও লগ্নিকারীদের প্রতি দায়িত্ব থাকে। বহু ক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থাগুলি আইপিও-য় মুনাফা সুদ্ধ পুঁজি তুলে নেয়। মার খান ছোট লগ্নিকারী।’’
এমন কিছু লোকসানের উদাহরণও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী। তিনি জানান, ওয়ান ৯৭ কমিউনিকেশন্স (পেটিএম) আইপিওতে শেয়ারের দাম রেখেছিল ২১৫০ টাকা। এখন তা প্রায় ৬২৫ টাকা। ফিনো পেমেন্ট ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে তা ৫৭৭ থেকে নেমেছে ২৫৬ টাকায়। পিবি ফিনটেকের ৯৮০ টাকা থেকে ৬৫৮ টাকায়। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলেন, “আইপিও পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত মার্চেন্ট ব্যাঙ্কারদেরও দায় আছে। বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি তৈরির আগে কন্ট্রোলার অব ক্যাপিটাল ইসু আইপিও-তে শেয়ারের মূল দামে প্রিমিয়ামের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করত। এখন সংস্থাগুলি তা করে মর্জি মতো।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy