এ মাসের গোড়ায় ঋণনীতিতে রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক) ৫.৫০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে বুধবার প্রকাশিত সেই ঋণনীতি বৈঠকের কার্যবিবরণীতে দেখা গিয়েছে, সেখানে অচিরেই সুদ কমানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্র বৈঠকে বলেছেন, ‘‘সুদের হার আরও কমানোর জায়গা রয়েছে। উপযুক্ত সময়ে তা করা হবে।’’ ফলে এ সপ্তাহে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে সেপ্টেম্বরের খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ১.৫৪ শতাংশে নামতে দেখেই বিশেষজ্ঞদের দাবি, ফের সুদ ছাঁটাইয়ের সময় উপস্থিত। এ বার ঋণের খরচ আরও কমানো হবে।
মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিল ইনটেলিজেন্স এ দিন তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, মূল্যবৃদ্ধির হার তলানিতে ঠেকায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অচিরেই সুদ আরও ছেঁটে আর্থিক বৃদ্ধিকে টেনে তোলার চেষ্টা করতে পারে। কারণ, আমেরিকার ৫০% শুল্কের জেরে অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে আর্থিক বৃদ্ধির ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার উপর চলতি অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধি পূর্বাভাসও ৪.৬% থেকে কমিয়ে ৩.২% করেছে তারা। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি থেকে সুদ মোট ১০০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে আরবিআই। পরের ঋণনীতি বৈঠক ৩-৫ ডিসেম্বর।
বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর দাবি, মূল্যবৃদ্ধি অনেক নীচে। এটাই সুযোগ সুদের হার আরও কমানোর। পাশাপাশি আমেরিকাতেও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর ফলে সে দেশে বন্ডের ইল্ড কমছে। এর ফলে সেখান থেকে বিদেশি লগ্নি ভারতে ঢোকার সম্ভাবনা বিপুল। অন্য দিকে আয়কর এবং জিএসটির হার কমায় বহু মানুষের হাতে খরচের যোগ্য টাকা আসছে। এই সময় সুদ কমালে তা আর্থিক বৃদ্ধিতে জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে। আইসিএআই-এর পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্ত বলেন, ‘‘চাহিদা বাড়ানোর জন্য মানুষের হাতে এখন বাড়তি টাকা রয়েছে। ফলে সুদের হার কমলে পণ্যের জোগান বাড়াতে শিল্প উৎপাদনে লগ্নি বাড়াবে বলেই আশা করা যায়। সেটা ঘটলে জিডিপি বৃদ্ধির হারও বাড়বে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)