E-Paper

কমেছে মূল্যবৃদ্ধি, বেড়েছে শিল্পোৎপাদন, নতুন বছরে বাজার চাঙ্গা হওয়ার আশা লগ্নিকারীদের

প্রথম ছ’মাসের শেষ লগ্নে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের শেষে সর্বকালীন উচ্চতায় উঠেছিল সূচক ও তার সুবাদে শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডের ন্যাভও। তার পর থেকে একাধিক কারণে বাজার পড়েই চলেছে।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ০৬:৩৩
প্রথম শেয়ার ছাড়ার তহবিল সংগ্রহের (আইপিও) পরিকল্পনা পিছোচ্ছে একাধিক সংস্থা।

প্রথম শেয়ার ছাড়ার তহবিল সংগ্রহের (আইপিও) পরিকল্পনা পিছোচ্ছে একাধিক সংস্থা। —প্রতীকী চিত্র।

দেশ এখন চলতি অর্থবর্ষের শেষ লগ্নে। মাত্র দু’সপ্তাহ পরেই শুরু হবে ২০২৫-২৬। সরকার, কর্পোরেট দুনিয়া এবং বহু মানুষের কাছে আগামী এই আর্থিক বছরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চলতি বছরের শেষ ছ’মাস, মানে অক্টোবর থেকে মার্চ ভাল কাটেনি শিল্প, শেয়ার বাজার এবং মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নিকারীদের। অথচ প্রথম ছ’মাসের শেষ লগ্নে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের শেষে সর্বকালীন উচ্চতায় উঠেছিল সূচক ও তার সুবাদে শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডের ন্যাভও। তার পর থেকে একাধিক কারণে বাজার পড়েই চলেছে। মাঝে মধ্যে পাওয়া দু’একটি ভাল খবর এলেও, তা ধস আটকাতে পারছে না। বাজারের তল কোথায় ভেবে ধন্দে বহু মানুষ। ফলে অনেক কম দামে পাওয়া গেলেও, নতুন করে শেয়ার কিনতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। এমনকি এমন পড়তি বাজারে প্রথম শেয়ার ছাড়ার তহবিল সংগ্রহের (আইপিও) পরিকল্পনাও পিছোচ্ছে একাধিক সংস্থা।

পরিস্থিতি যাই হোক, চলতি অর্থবর্ষের শেষে এবং নতুনের প্রথমে লগ্নিকারীদের কিছু কাজ থাকে। যেমন, যাঁরা পুরোনো কর কাঠামোয় আছেন, তাঁদের দু’সপ্তাহের মধ্যে কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে লগ্নি সারতে হবে। দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করার থাকলে, করে ফেলতে হবে। শেয়ারের দামে ধস নামলেও, দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভের প্রথম ১.২৫ লক্ষ টাকা করমুক্ত আয়ের সুযোগ নিতে চাইলে অবিলম্বে উপযুক্ত শেয়ার বেচে লাভ ঘরে তুলতে হবে।

এ বার নতুন বা প্রধান কর কাঠামোয় কেন্দ্র বিপুল ছাড় দেওয়ায় বেশির ভাগ করদাতা এর আওতায় আসবেন বলে ধারণা। ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত হওয়ায় (৮৭এ ধারায় রিবেট-সহ) তাঁদের বড় অংশকে আয়কর দিতে হবে না। আয় ১২-২৪ লক্ষ বা তারও বেশি হলে বাবদ সাশ্রয় হবে ৮০,০০০-১,১০,০০০ টাকা। স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সেস ধরলে আরও বেশি। মাসে প্রায় ১০,০০০ টাকা। তা লগ্নির পরিকল্পনা এখনই করা যায়।

এত দিন কর বাঁচাতে লগ্নিকারীদের একাংশ শেয়ার এবং ফান্ডে ঢেলে লগ্নি করেছেন। কিন্তু শেয়ারের দুর্দিনে অনেকেই এর থেকে দূরে সরেছেন। অন্য দিকে করমুক্ত আয় বাড়ায় এবং ২৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে করের হার কমায় ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে স্থায়ী আমানতের মতো স্থির আয়যুক্ত প্রকল্পের আকর্ষণ বেড়েছে। আগে যাঁরা এগুলির থেকে ৭%-৮% আয়ে ২০%-৩০% কর দিতেন, আদতে তাঁদের সেই সূত্রে প্রকৃত আয় (ইল্ড) দাঁড়াত অনেকটাই কম। এখন তা কিছুটা বাড়তে পারে।

ফেব্রুয়ারিতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ ছাঁটাইয়ের পরে অনেক ব্যাঙ্ক ঋণে সুদ কমালেও, মেয়াদি আমানতে এখনও তেমন কমেনি। গত মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৩.৬১ শতাংশে নেমে আসায় ৭-৯ এপ্রিলের ঋণনীতিতে আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমতে পারে। তখন হয়তো ঋণের সঙ্গে আমানতেও সুদ কমাবে ব্যাঙ্কগুলি। ফলে তার আগে বড় মেয়াদে স্থায়ী আমানতে টাকা রাখার পরিকল্পনা সারা যায়। সুদ-সহ করযোগ্য আয় ১২ লক্ষের খানিকটা বেশি হলে জমা টাকার একাংশ প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান বা বাবা-মাকে (যাঁদের আয় নেই বা ১২ লক্ষের কম) দান হিসেবে দিতে পারেন। এতে সংশ্লিষ্ট করদাতার সুদ বাবদ আয় কমে ১২ লক্ষ টাকার নীচে নামতে পারে। যাঁদের নামে টাকা দান হিসেবে দেওয়া হল, তাঁদেরও কর দিতে হবে না।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Stock Market Financial Year

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy