সোনা-রুপোর অলঙ্কার থেকে শুরু করে বাড়ির দলিল। সম্পত্তির নথি ও মূল্যবান সামগ্রী সুরক্ষিত রাখতে অনেকেই বেছে নেন ব্যাঙ্কের লকার। সেখানে রাখা কোনও জিনিস নষ্ট হয়ে গেলে, তার দায় কতটা নেবে ব্যাঙ্ক? এ ব্যাপারে আমজনতার তেমন কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই। আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
কয়েকটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের ভিত্তিতে লকার ভাড়া দিয়ে থাকে ব্যাঙ্ক। লকারে কোন গ্রাহক কী রাখছেন, তা জানার অধিকার নেই তাদের। আর তাই সেখানে রাখা সোনার জন্য কোনও গ্যারান্টি দেন না ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ লকারে রাখা ‘হলুদ ধাতু’ কোনও কারণে নষ্ট হয়ে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার জন্য কখনও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে দায়ী করতে পারবেন না গ্রাহক। শুধু তা-ই নয়, লকারে রাখা সামগ্রীর উপর কোনও বিমাও নেই।
তবে ২০০৫ সালে ব্যাঙ্কের লকারের ব্যাপারে একটি যুগান্তকারী রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, কর্মীদের অবহেলা বা নিরাপত্তার ত্রুটির কারণে লকার থেকে গ্রাহকের সামগ্রী চুরি হলে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ওই রায়ের পর লকার রুমের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেয় দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ক। সেখানে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়া লকার রুমের প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে তারা।
লকার খোলার জন্য সব সময় দু’টি চাবি ব্যবহার হয়ে থাকে। এর একটি গ্রাহকের কাছে এবং অপরটি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে থাকে। একে বলে ডবল-কি অপারেশন। এ ছাড়া সমস্ত ব্যাঙ্কই নিয়মিত লকার রুমের উপর নজরদারি চালায়। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অগ্নিকাণ্ড বা নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও চুরির ঘটনা ঘটলে লকার ব্যবহারকারীকে কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কোনও আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই।
লকার ভাড়া নেওয়ার সময়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে হয় গ্রাহককে। সেখানেই কর্তৃপক্ষের ভূমিকার স্পষ্ট উল্লেখ থাকে। এ ছাড়া এটি নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করা, এর ভাড়া সময়মতো জমা করা এবং অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রাখার দিকটি অবশ্যই ব্যবহারকারীকে নজর দিতে হবে। লকার নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে হলে অবশ্যই আগে থেকে লিখিত নোটিস জারি করতে হবে। পাশাপাশি লকার থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে ব্যবহারকারীকে সময় দেওয়াও বাধ্যতামূলক।