সপ্তাহে ১১০ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করছে সংস্থা। ফলে স্বাস্থ্যের গুরুতর সমস্যা দেখা দিচ্ছে কর্মীদের। এমনকি, হাসপাতালেও ভর্তি হতে হচ্ছে তাঁদের। তেমনটাই দাবি করেছেন, আমেরিকার একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের অধস্তন কর্মীরা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উইসকনসিনের মিলওয়াকিতে অবস্থিত শতাব্দীপ্রাচীন ওই ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের নাম রবার্ট ডব্লিউ. বেয়ার্ড। সংস্থার ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল’ দলের একাংশের দাবি, দিনে তাঁরা প্রায়শই ২০ ঘণ্টা করে কাজ করেন। এর ফলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ক্লান্তির কারণে কমপক্ষে দু’জন কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে এক জন বাড়িতে পড়ে যান। চিকিৎসার সময় দেখা যায় তাঁর অগ্ন্যাশয় বিকল হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
ওই প্রতিবেদনে বেশ কয়েক জন অধস্তন ব্যাঙ্কারের অভিজ্ঞতার উল্লেখ করা হয়েছে। ওই কর্মীদের দাবি, কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয় তাঁদের। এক জন প্রাক্তন কর্মী আবার জানিয়েছেন, তিনি প্রায় এক বছর ওই সংস্থায় কাজ করেছেন এবং নথিপত্র প্রস্তুত করার জন্য তাঁকে প্রায়ই সারা রাত জেগে থাকতে হত। এক বার তিনি নৈশভোজের জন্য ২৫ মিনিট অফিসের বাইরে গিয়েছিলেন বলে ম্যানেজার কড়া ভাষায় তাঁকে অপমান করেছিলেন বলেও তাঁর দাবি।
আরও পড়ুন:
অন্য এক কর্মী আবার সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগকে জানিয়েছিলেন যে, প্রতি দিনের কাজের চাপ অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। এর কিছু দিন পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। চিকিৎসকদের মতে, গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যাটি দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার কারণে হয়েছিল। কয়েক সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ‘ভাল কাজ করতে না পারার’ কারণে তাঁকে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
পেশাদারদের জনপ্রিয় ফোরাম ‘ওয়াল স্ট্রিট ওসিস’-এ একটি বেনামি পোস্টের পরে পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। নেটাগরিকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেই পোস্ট। পোস্টটিতে রবার্ট ডব্লিউ. বেয়ার্ডের অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে কঠোর আচরণের বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল। সেই পোস্টে ওই সংস্থার অনেক প্রাক্তন কর্মী নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ওয়াল স্ট্রিট জুড়ে কর্মক্ষেত্রে সংস্কার হয়েছে। সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও অভিযোগ, বেয়ার্ডের ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল’ দল সেই নিয়মগুলি উপেক্ষা করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরু থেকে বেয়ার্ডের ইন্ডাস্ট্রিয়াল দলের এক ডজনেরও বেশি অধস্তন চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে কয়েক জনকে অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল।