Advertisement
E-Paper

পরিকাঠামোয় উৎপাদন তলানিতেই

আরও কমলো পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন। সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এপ্রিলে তা সরাসরি সঙ্কুচিত হয়েছে ০.৪ শতাংশ। এর আগে মার্চেও তা কমেছে ০.১ শতাংশ, যদিও এক বছর আগের এপ্রিলে পরিকাঠামোর আওতায় থাকা ৮টি শিল্পের উৎপাদন বেড়েছিল ৫.৭ শতাংশ। তবে পরিকাঠামো শিল্প এই মুহূর্তে অর্থনীতির হাল ফেরার কোনও আভাস না-দিলেও, এই মুহূর্তে রুপোলি রেখা দেশের মধ্যেই চাহিদা বাড়ার হাত ধরে মে মাসে কল-কারখানার উৎপাদন কিছুটা দ্রুতগতিতে বাড়ার ইঙ্গিত।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০৩:৩৩

আরও কমলো পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন। সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এপ্রিলে তা সরাসরি সঙ্কুচিত হয়েছে ০.৪ শতাংশ। এর আগে মার্চেও তা কমেছে ০.১ শতাংশ, যদিও এক বছর আগের এপ্রিলে পরিকাঠামোর আওতায় থাকা ৮টি শিল্পের উৎপাদন বেড়েছিল ৫.৭ শতাংশ। তবে পরিকাঠামো শিল্প এই মুহূর্তে অর্থনীতির হাল ফেরার কোনও আভাস না-দিলেও, এই মুহূর্তে রুপোলি রেখা দেশের মধ্যেই চাহিদা বাড়ার হাত ধরে মে মাসে কল-কারখানার উৎপাদন কিছুটা দ্রুতগতিতে বাড়ার ইঙ্গিত।

এপ্রিলে বিদ্যুৎ, সিমেন্ট, সার ও তেল শোধনাগারের উৎপাদন কমার জেরেই কমেছে পরিকাঠামো শিল্পের উৎপাদন, যার ছাপ সার্বিক শিল্প বৃদ্ধির সরকারি পরিসংখ্যানেও পড়বে বলে মনে করছে শিল্পমহল। এই পরিপ্রেক্ষিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আগামী কালের ঋণনীতিতে সুদ কমানোর দাবি আরও জোরালো হয়েছে। কম সুদে ঋণ জুগিয়ে শিল্পকে চাঙ্গা করার পক্ষে সওয়াল করেছেন তাঁরা, যার হাত ধরে বাড়বে আর্থিক বৃদ্ধির হার।

প্রসঙ্গত, কয়লা, অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল শোধন, সার, ইস্পাত, সিমেন্ট ও বিদ্যুত্‌, এই আটটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকেই পরিকাঠামো শিল্পের আওতায় ধরা হয়। সার্বিক শিল্পোত্‌পাদন বৃদ্ধির হার হিসাবে এই পরিকাঠামো ক্ষেত্রের গুরুত্ব ৩৮ শতাংশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্কও তার ঋণনীতি তৈরিতে গুরুত্ব দেয় এই হারকে। সেই কারণেই এই হার তলানিতে ঠেকায় শিল্পকে চাঙ্গা করতে আরও জোরদার হয়েছে সুদ কমানোর দাবি। এপ্রিলে উৎপাদন বেড়েছে শুধু কয়লা ও ইস্পাত শিল্পে। তার মধ্যে কয়লা উৎপাদন বেড়েছে ৭.৯ শতাংশ। ইস্পাত উৎপাদন বাড়লেও তার হার কমেছে ০.৬ শতাংশ। এ ছাড়া অশোধিত তেল উৎপাদন কমেছে ২.৭ শতাংশ, প্রাকৃতিক গ্যাস ৩.৬ শতাংশ, বিদ্যুৎ ১.১, সিমেন্ট ২.৪, তেল শোধনাগারের উৎপাদন ২.৯, সার ০.০৪ শতাংশ।

সোমবারই প্রকাশিত এইচএসবিসি-র সমীক্ষা অবশ্য জানিয়েছে, মে মাসে ভারতে চাহিদার হাল ফেরায় কল-কারখানার উৎপাদন বেড়েছে গত চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে। আন্তর্জাতিক আর্থিক তথ্য পরিষেবা সংস্থা মার্কিট-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী এইচএসবিসি ইন্ডিয়া-র ক্রয়ক্ষমতার মূল্য সূচক বা পার্চেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) মে মাসে বেড়ে ছুঁয়েছে ৫২.৬। এপ্রিলে তা ছিল ৫১.৩। চলতি ২০১৫-র জানুয়ারি থেকেই নতুন বরাত ও উৎপাদন বাড়ছে দ্রুতগতিতে বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়। প্রসঙ্গত, এই সূচক ৫০ ছাড়ালে তা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। তার নীচে থাকলে সঙ্কোচন বোঝায়। সেই অনুসারে গত ১৯ মাস ধরেই কল-কারখানার উৎপাদন বাড়ছে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। তার মধ্যে মে মাসেই বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন মার্কিট-এর অর্থনীতিবিদ। এই ১৯ মাসে দেশের পাশাপাশি বিদেশে ভারতের রফতানি পণ্যের চাহিদাও বেড়েছে। তবে মে মাসে রফতানি পণ্যের বরাত বাড়ার হার কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা।

তবে উৎপাদন বাড়লেও কল-কারখানায় কর্মসংস্থান তেমন বাড়েনি বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। যে-সমস্ত সংস্থাকে নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে, সেগুলির ৯৯ শতাংশই জানিয়েছে, কর্মী সংখ্যা প্রায় একই আছে। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, চাহিদা এই স্তরেই থাকবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলেই তারা এখনই নিয়োগ বাড়ানোর পথে হাঁটছে না।

মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে মার্কিট জানিয়েছে, সাধারণ ভাবে আগের তুলনায় তা অনেকটা কমেছে। কিন্তু কাঁচা মালের দাম বাড়ায় মে মাসে বেড়েছে উৎপাদিত পণ্যের দরও। তবে মূল্যবৃদ্ধি কমার মুখ নেওয়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানো জরুরি বলে মনে করছে মার্কিট-ও। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে দু’বার সুদ কমানোর পথে হাঁটলেও গত ৭ এপ্রিল ঋণনীতি ফিরে দেখার সময়ে তা অপরিবর্তিতই রেখেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তখন অসময়ে কিছুটা বৃষ্টি হওয়ায় তার জেরে ফলন কমবে বলে আশঙ্কা করেছিল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। খাদ্যপণ্যের দামে তা যাতে প্রভাব না-ফেলে, সেই কারণেই সুদে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা হয়। তবে আগামী কাল ঋণনীতি নিয়ে পর্যালোচনায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক রোপো রেট (রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে-হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে স্বল্প মেয়াদে ঋণ দেয়) ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৭.২৫ শতাংশে নিয়ে যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যাঙ্কিং শিল্পেরও আশা, এ যাত্রায় সুদ কমবে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান টি এম ভাসিন বলেছেন, যেহেতু মূল্যবৃদ্ধির জায়গায় সম্প্রতি মূল্যহ্রাস হয়েছে, তাই সুদ কমার সম্ভাবনাও বেশি। প্রসঙ্গত, পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি এপ্রিলে দাঁড়িয়েছে (-) ২.৬৫ শতাংশ, যার মানে দাম খাতায়-কলমে বাড়েনি, তা কমেছে ২.৬৫ শতাংশ হারে।

Loan policy reserve bank HSBC India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy