প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি টানার চেষ্টায় কসুর করেনি রাজ্য সরকার। হয়েছে বাণিজ্য সম্মেলন, রোড শো। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি লগ্নির ছবি মলিন!
কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জানুয়ারি-মার্চে রাজ্যে ওই লগ্নি এসেছিল ১২৭৯ কোটি টাকার। গত অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪)
একই সময়ে তা হয়েছে ৫৫২ কোটি। অর্থাৎ ৫৬.৮৪% কম। প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি টানার তালিকায় প্রথম চারটি স্থানে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাত, দিল্লি। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে তা সামান্য কমেছে। কর্নাটক, গুজরাত, দিল্লির বেড়েছে যথাক্রমে ১১,০০০ কোটি, ৮০০০ কোটি, ১১,২০০ কোটি টাকা।
অথচ পুঁজি টানতে দেশ-বিদেশে রোেড শো করেছে রাজ্য। সেপ্টেম্বরে স্পেন এবং দুবাইয়ে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও বিদেশি লগ্নির ভাটায় চিন্তিত সংশ্লিষ্ট মহল। এ নিয়ে বক্তব্য জানতে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।
আর্থিক বিশেষজ্ঞ সুমন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির কমার প্রবণতা উদ্বেগের। কর্নাটক, গুজরাত যেখানে লগ্নি বাড়াতে পারল, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের এই অবস্থা হতাশাজনক। আরও খারাপ বিষয় হল ঝাড়খণ্ড, তেলঙ্গনার মতো রাজ্যও তা টেনে নিচ্ছে, আমরা পারছি না।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘দেখা যাচ্ছে বিদেশি পুঁজির বড় অংশই পশ্চিম ভারতে চলে যাচ্ছে। আর রাজ্যে ক্রমশ কমছে। আমরা পিছিয়ে পড়ছি।’’ যদিও শ্লথ বিশ্ব অর্থনীতি এর একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পকর্তার কথায়, ‘‘রাজ্য বিদেশি লগ্নি টানার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাতে কতটা আন্তরিকতা আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। জমি নীতি থেকে আইনশৃঙ্খলা বা তোলাবাজি— অভিয়োগ একাধিক। তার একটা প্রভাব তো থাকবেই।’’ তাঁর মতে, প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি কমে যাওয়া চিন্তার। রাজ্য সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)