দশটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন ৯ জুলাই দেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিলেও এতদিন মোদী সরকার কোনও তাপ-উত্তাপ দেখায়নি। শেষ বেলায় আচমকাই সক্রিয় হয়ে শ্রম মন্ত্রক সংগঠনের নেতানেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করল। শনিবার শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়ার দফতর থেকে তাঁদের জানানো হয়, মন্ত্রী প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করতে চান। কী বিষয়ে আলোচনা জানতে চাওয়া হলে দফতর বলেছে, নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি নেই। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংগঠনের নেতানেত্রীরা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।
আজ সংগঠনের শীর্ষ নেতানেত্রীরা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, কয়লা, অন্যান্য খনি, ব্যাঙ্ক, ইস্পাত, জীবন বিমা, অন্যান্য বিমা, পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ, ডাক, টেলিযোগাযোগ, গণ পরিবহণ ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন সংস্থা কর্তৃপক্ষকে বুধবারের ধর্মঘটের নোটিস দিয়েছেন। গত মার্চে শ্রমিক সম্মেলনে কেন্দ্রের ‘শ্রমিক বিরোধী নীতি’ এবং চারটি শ্রম বিধির বিরোধিতায় ২০ মে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পহলগামের ঘটনার কারণে তা পিছিয়ে ৯ জুলাই করা হয়। কিন্তু সরকার যোগাযোগ করেনি। এখন শেষবেলায় স্থানীয় স্তরে ইউনিয়নগুলিকে বলা হচ্ছে, এই ধর্মঘট বেআইনি। সংগঠনের নেতাদের অবশ্য দাবি, কেরল, তামিলনাড়ু, বিহারের মতো রাজ্যে ধর্মঘট সর্বাত্মক বন্ধের চেহারা নেবে। রেল, প্রতিরক্ষা কর্মীরাও বিক্ষোভে যোগ দেবেন।
সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, ‘‘অর্থনীতিকে অচল করতে নয়, সজীব রাখতেই এই ধর্মঘট। কারণ, দেশের আর্থিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে। কেন্দ্র দেখাচ্ছে, তারা ধর্মঘটের পরোয়া করছে না। তবে শ্রমিকদের বিরোধিতার জন্যই ২০২০-তে শ্রম বিধি পাশ করলেও তা কার্যকর করা যায়নি। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে মোদী সরকার বলেছিল, ২০২৫-এর ১ এপ্রিল শ্রম বিধির বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। এখন রাজ্যগুলিকে আইন সংশোধন করতে বলে ঘুরপথে চালু করতে চাইছে। মাণ্ডবিয়া শ্রমমন্ত্রী হওয়ার পরে গত অগস্টে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তারা সেখানেই কর্মসংস্থানে উৎসাহ ভাতার বিরোধিতা করেছিল। এআইটিইউসি নেত্রী অমরজিৎ কউর বলেন, ‘‘এর পরে আর সরকার যোগাযোগ করেনি। ২০১৫-র পরে ভারতীয় শ্রমিক সম্মেলনও ডাকা হয়নি। কেন্দ্র সম্প্রতি ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনসেন্টিভ স্কিম’ ঘোষণা করেছে। স্থায়ী বেতনের কর্মীদের বাদ দিয়ে শিক্ষানবীশদের দিয়ে কাজ চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)