মোবাইলের হাত ধরেই ২০ শতাংশের কাছাকাছি ব্যবসা বাড়াচ্ছে ক্যামেরা।
ক্যামেরার প্রতিযোগী মোবাইল। প্রচলিত এই ধারণা ভেঙে মোবাইল ফোন হয়ে উঠছে ক্যামেরার সহযোগী। কারণ, মোবাইলে কিছুটা হাত পাকিয়ে ছবির মান আরও উন্নত করতে ক্রেতা বেছে নিচ্ছেন প্রথাগত ক্যামেরা। আসলে মোবাইলে ছবি তোলাই অনেকের মধ্যে উস্কে দিচ্ছে এই শখ। ঠিক তখনই তাঁরা ঝুঁকছেন পেশাদার ক্যামেরার দিকে। সে জন্য বাড়তি খরচ করতেও পিছপা হচ্ছেন না।
কফি শপের আড্ডা, রাস্তাঘাট বা বেড়ানোর ছবি। হাতে বন্দি মোবাইলেই আটকে থাকছে সব মুহূর্ত। থাকছে নানা রঙের নিজস্বীও। মোবাইলের ‘মেমরি’ ভর্ত্তি সব ছবির অ্যালবাম । যা চটজলদি পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে। ঝুলি ভরে উঠছে ‘লাইক’ ও মন্তব্যে। আর এ ভাবেই তৈরি হয়ে যাচ্ছে ছবি তোলার আগ্রহ। আরও ভাল ছবি তোলার তাগিদে বাড়ছে প্রথাগত ক্যামেরা কেনার প্রবণতা। এ প্রসঙ্গে ক্যানন ইন্ডিয়ার প্রধান কাজুতাডা কোবেয়াশির দাবি, অন্তত ২০% মানুষ ফোনে ছবি তোলা শুরু করলেও পরবর্তী ধাপে পেশাদার ক্যামেরা কেনেন। তিনি বলেন, ‘‘মোবাইল ফোনে ছবি তোলার শখ ক্যামেরার বাজারকে সম্প্রসারিত করছে।’’
মোবাইল ফোনকে প্রতিযোগী হিসেবে দেখছে না আর এক জাপানি সংস্থা নিকন-ও। বরং মোবাইল ও প্রথাগত ক্যামেরা অনেক ক্ষেত্রে হয়ে উঠছে একে অপরের পরিপূরক। মোবাইলে ছবি তোলার প্রবণতাকে তাই ইতিবাচক বলেই আখ্যা দিচ্ছেন নিকন ইন্ডিয়ার প্রধান কাজুও নিনোমিয়া। তাঁর মতে, ছবির মান উন্নত করতে মোবাইল থেকে ক্যামেরায় উন্নীত হচ্ছেন অনেকেই।
তথ্য পরিসংখ্যানও এই প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্যামেরার বাজার বাড়ার হিসেব দিচ্ছে। ভারতের বাজারে মোট চাহিদা ৬,৩৫,০০০ ক্যামেরা। এর মধ্যে ডিজিটাল সিঙ্গল লেন্স রিফ্লেক্স বা ডিএসএলআর ক্যামেরা ৪,১২,০০০। ‘কমপ্যাক্ট’ বা ‘পয়েন্ট অ্যান্ড শ্যুট’ ক্যামেরার চাহিদা ২,২৩,০০০। বিশেষজ্ঞ সংস্থা টেকস্কাই রিসার্চের সমীক্ষা বলছে এ বছরের মধ্যে ভারতে ক্যামেরার বাজার ছুঁয়ে ফেলবে ৩০০ কোটি ডলার।
তবে ফোনে ছবি তোলার হিড়িকে মার খেয়েছে কমপ্যাক্ট ক্যামেরা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সাধারণ কমপ্যাক্ট ক্যামেরার ৯০ শতাংশের বেশি বাজার দখল করেছে মোবাইল। ফোনে ছবি তোলার কাজ হয়ে যাওয়ায় এ ধরনের ক্যামেরা এখন প্রায় ব্রাত্য।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়্যাটস-অ্যাপের দৌলতে মোবাইল ফোনে ছবি তোলার রমরমা ক্রমশ বাড়ছে। ছবি তুলে চটজলদি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বন্ধুবান্ধবদের তা দেখানো যাচ্ছে। ছবি ‘শেয়ার’ বা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার এই প্রবণতা মেনে নিয়ে প্রথাগত ক্যামেরাতেও এই সুবিধা দিচ্ছে ক্যানন, সোনি, নিকন, প্যানাসোনিক-সহ সব ক্যামেরা প্রস্তুতকারক। নেট যোগাযোগের জন্য ক্যামেরায় ‘ওয়াই-ফাই’ বা ‘সিম’ ব্যবহারের সুযোগ থাকছে।
শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতে ক্যামেরার চাহিদা বাড়ার অন্যতম কারণ হাতে খরচ করার মতো টাকার পরিমাণ ও পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি। পাশাপাশি একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে ছোট ছোট পরিবার তৈরি হওয়ার ফলেও ক্যামেরার চাহিদা বাড়ছে বলে জানান ক্যাননের কোবেয়াশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy