Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Moody's

সমস্যা দেশেই! বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটল মুডি’জ়

মুডি’জ় তাদের ‘গ্লোবাল ম্যাক্রো আউটলুক’ গবেষণাপত্রে জানিয়েছে, ২০২০ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৫.৪%, পরের বছর ৫.৮%।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:৪১
Share: Save:

বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ভারতের চলতি অর্থবর্ষের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছিল আগেই। পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং খোদ সরকারি সমীক্ষা। এ বার ২০২০ সালের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করল মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ় ইনভেস্টর্স সার্ভিস। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তারা জানিয়েছে, ভারতের অর্থনীতি শ্লথ হওয়ার মূল কারণ অভ্যন্তরীণ। আঙুল তুলেছে যথারীতি ঋণ বৃদ্ধি ও চাহিদায় ধাক্কার দিকে। যেখানে কেন্দ্র বারবার দাবি করে আসছে, শুল্ক-যুদ্ধ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কারণেই ধাক্কা খাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। এর আগে চলতি অর্থবর্ষের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছিল মূল্যায়ন সংস্থাটি।

মুডি’জ় তাদের ‘গ্লোবাল ম্যাক্রো আউটলুক’ গবেষণাপত্রে জানিয়েছে, ২০২০ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৫.৪%, পরের বছর ৫.৮%। নভেম্বরেই অবশ্য ওই পূর্বাভাস ছিল যথাক্রমে ৬.৬% এবং ৬.৭%। সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ত্রৈমাসিকে হয়তো ধাক্কা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবে অর্থনীতি, তবে তা আগের প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটাই কম।

মুডি’জ়ের তথ্য

• ২০১৯ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫%

• ২০২০ সালে তা হতে পারে ৫.৪%। ২০২১ সালে ৫.৮%

• নভেম্বরে পূর্বাভাস ছিল যথাক্রমে ৬.৬% এবং ৬.৭%

(মুডি’জ় বৃদ্ধির হারের হিসেব কষেছে ক্যালেন্ডার বর্ষের ভিত্তিতে)

সমস্যা যেখানে

• গত দু’বছর ধরে ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ মন্থর হচ্ছে

• আন্তর্জাতিকের তুলনায় অভ্যন্তরীণ সমস্যাই বড় কারণ

• বাড়াতে হবে চাহিদা ও ঋণ। কিন্তু বাজেটে চাহিদা বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেই

• সুদের হার আরও কমিয়ে ঋণের চাহিদা বাড়ানো যেতে পারে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলা বড় বাধা

বিশ্ব পরিস্থিতি

• এ বছরে জি-২০ গোষ্ঠীর বৃদ্ধির হার হতে পারে ২.৪%। পরের বছর ২.৮%

• চিনের ক্ষেত্রে তা ৫.২% এবং ৫.৭%

• করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়বে পর্যটন শিল্প ও পণ্য সরবরাহে

মুডি’জ়ের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বেশ কিছু সমস্যা কাজ করছে ভারতের অর্থনৈতিক সমস্যার পিছনে। প্রথমত, চাহিদায় ভাটার টান এলেও, শেষ কেন্দ্রীয় বাজেটে এমন কোনও ত্রাণ প্রকল্প নেই যা চাহিদাকে উজ্জীবিত করতে পারে। বস্তুত, করছাড় দিয়ে তা বাড়ানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে সমীক্ষায়। দ্বিতীয়ত, ঋণের চাহিদা ও জোগান বৃদ্ধির পথ আগামী দিনের জন্য খোলা রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনা না-গেলে ওই পথে হাঁটা শীর্ষ ব্যাঙ্কের পক্ষে কঠিন হবে বলে জানিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থাটি। আবার বিগত কয়েকটি ঋণনীতিতে রেপো রেট ১৩৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তা সত্ত্বেও ঋণের জোগান বিশেষ বাড়েনি। এরই মধ্যে জানুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৭.৫৯ শতাংশে ঠেকেছে।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জি-২০ গোষ্ঠী এবং চিনের বৃদ্ধির পূর্বাভাসও অবশ্য ছাঁটাই করেছে মুডি’জ়। সতর্ক করেছে করোনাভাইরাসের প্রভাব সম্পর্কে। জানিয়েছে, মার্চের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও পর্যটন এবং পণ্য সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব কিছু দিন থাকবে। বস্তুত, ভারতের গাড়ি ও ওষুধ-সহ কয়েকটি ক্ষেত্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তাদের কাঁচামালের বড় অংশ আসে চিন থেকে। ফলে তার সরবরাহ ধাক্কা খেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Moody's Indian Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE