বর্তমানে দেশে এক কাপ চায়ের থেকে কম খরচে এক জিবি ডেটা ব্যবহারের সুবিধা মেলে, মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। দাবি, গত কয়েক বছরে ডিজিটাল পরিকাঠামোর উন্নতিই এর কারণ। যা ভারতকে এ ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম সারিতে তুলে এনেছে। তারই ফলস্বরূপ ডেটা পরিষেবার খরচ এতটা কমে গিয়েছে। এই বার্তা দিয়েই ‘ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেসে’ মোদীর ডাক, ‘‘এটাই ভারতে লগ্নির জন্য সবচেয়ে উপযোগী ও উৎকৃষ্ট সময়। আপনারা এগিয়ে আসুন, সেমিকনডাক্টর, মোবাইল ফোন, চিপ-সহ যে কোনও ক্ষেত্রেই পুঁজি স্বাগত।’’
বিরোধীদের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে প্রধানমন্ত্রী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, “যখন আমি এই প্রকল্প ঘোষণা করেছিলাম, তখন অনেকে ব্যঙ্গ করেছিল। কিন্তু আজ ভারত নিজেই দেশের মাটিতে ৫জি ও ৬জি-র পরিকাঠামো তৈরি করছে। সম্প্রতি সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৪জি পরিকাঠামো চালু হয়েছে। এগুলি সম্ভব হয়েছে ভারতীয়দের ইচ্ছা ও মেধার কারণে।’’ মোদী জানান, ভারত এখন বিশ্বের সেই পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি, যারা নিজেদের টেলিকম প্রযুক্তি নিজেরাই তৈরি করতে সক্ষম। তাই এটাই এ দেশে লগ্নি করার সেরা সময়। তাঁর কথায়, ‘‘এখন ডেটা বা ইন্টারনেটের ব্যবহার শখের ব্যাপার নয়। দৈনন্দিন কাজে তা ব্যবহার হয়। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে ধরা হয়। সেই কারণেই বিশ্বের মধ্যে ভারত ডেটা ব্যবহারে প্রথম সারিতে। পাশাপাশি, ভারতে ১৪০ কোটি জনগণের যে বাজার, তা-ও বিশ্বে আর কোথাও মিলবে না বলেই মন্তব্য মোদীর। লগ্নিকারীদের উদ্দেশে আহ্বান, এখানে যে সুবিধা ও সাহায্য সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া সম্ভব, তা আর কোথাও মেলে না। কেন্দ্র ডিজিটাল পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আলাদা পরিকল্পনা করেছেন।
মোদীর দাবি, আলাদা করে নজর দেওয়াতেই গত ১০ বছরে দেশে বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরি বেড়েছে ছ’গুণ। মোবাইল ফোন তৈরি বেড়েছে ২৮ গুণ। আর সেগুলির রফতানি বেড়েছে ১২৭ গুণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, একটি আন্তর্জাতিক মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশীয় ৪৫টি সংস্থা। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩.৫ লক্ষের বেশি। টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও এ দিন জানান, ৪জি ও ৫জির পরে ভারতের লক্ষ্য এখন ৬জি প্রযুক্তির অন্তত ১০% ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব পাওয়া। পাশাপাশি, কৃত্রিম উপগ্রহ ভিত্তিক ইন্টারনেট (স্যাট-নেট) পরিষেবাকেও ভবিষ্যতের সংযোগ হিসেবে তকমা দেন তিনি। বলেন, “এই প্রযুক্তির উপর ভর করে ২০৩৩-এর মধ্যে বিশ্বে নেটের বাজার তিন গুণ বাড়বে। বর্তমানে এই বাজারের আকার ৪০০ কোটি ডলার, তা ২০৩৩-এর মধ্যে দাঁড়াবে ১৫০০ কোটি ডলারে।”
তিনিও প্রধানমন্ত্রীর সুরে লগ্নিকারীদের ডাক দিয়ে জানান, ‘‘এখানে কাজ করুন, গবেষণা করুন, কারখানা গড়ুন, লগ্নি করুন। কেন্দ্র সাহায্য করতে প্রস্তুত।’’ স্যাট-নেটের প্রসঙ্গ টেনে সিন্ধিয়ার বক্তব্য, এই ক্ষেত্রই আগামী দিনে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)