Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভোট আসতেই মুখে ফের ১০% বৃদ্ধির স্বপ্ন

চার বছর পেরিয়ে ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে বৃদ্ধিকে সেই দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়াই কেন্দ্রের কাছে চ্যালেঞ্জ বলে দাবি প্রধানমন্ত্রী মোদীর।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি ও চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

গত লোকসভা ভোটের আগে বৃদ্ধিকে ১০ শতাংশের উপরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। চার বছর পেরিয়ে ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে বৃদ্ধিকে সেই দুই অঙ্কের ঘরে নিয়ে যাওয়াই কেন্দ্রের কাছে চ্যালেঞ্জ বলে দাবি প্রধানমন্ত্রী মোদীর। সেই লক্ষ্য পূরণে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করার পক্ষে রবিবার সওয়াল করলেন তিনি।

তাঁর এই মন্তব্যের পরেই আক্রমণ ধেয়ে এসেছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। তাদের দাবি, নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর জেরে বৃদ্ধির যে চাকা বসে গিয়েছিল, এক বছরে তাকে নানা ভাবে টেনে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও গত অর্থবর্ষে বৃদ্ধি ৭% ছুঁতে পারেনি। এই অবস্থায় তাকে দু’অঙ্কে নিয়ে যাওয়া কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তারা।

এ দিন দিল্লিতে নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের চতুর্থ বৈঠকে মোদী বলেন, গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৭%। এখন চ্যালেঞ্জ তা দশের উপরে নিয়ে যাওয়ার। তাঁর দাবি, ভারতকে দ্রুত পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হিসেবে দেখতে চায় বিশ্ব। লক্ষ্যে পৌঁছতে রাজ্যগুলিকেও এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। তুলে ধরেন জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সাফল্যও।

অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের দাবি, নোটবন্দির পরে বৃদ্ধি ১৫০ বেসিস পয়েন্ট কমবে বলে যে আশঙ্কা ছিল, তা বাস্তব।

কিন্তু বাস্তব হল, বৈঠকে ‘নতুন ভারত ২০২২’-এর খসড়া রূপরেখা পেশের কথা থাকলেও, তা হয়নি। নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের দাবি, ‘‘খসড়া প্রায় তৈরি। দু’এক দিনেই মত জানতে চেয়ে তা রাজ্যগুলিকে পাঠানো হবে। আজ পেশ করা হয়নি, কারণ মুখ্যমন্ত্রীদের মনে হত, ভাল করে না দেখেই মত দিতে বলা হচ্ছে।’’

খটকা যেখানে

• বৃদ্ধি মুখ তুললেও, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তা ৭% ছোঁয়নি।

• ছোঁয়া সম্ভব হয়নি ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষের ৭.১% বৃদ্ধিকেও।

• এই অবস্থায় দুই অঙ্কের বৃদ্ধির স্বপ্ন সফল হবে কী ভাবে?

এ দিনই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের দাবি, নোটবন্দির পরে বৃদ্ধি ১৫০ বেসিস পয়েন্ট কমবে বলে যে আশঙ্কা ছিল, তা বাস্তব। এই ধরনের ঘটনা কোনও দেশের পক্ষেই কাম্য নয়। তোপ দেগে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুর্জেওয়ালাও বলেন, ‘‘মোদী জানুয়ারি-মার্চের বৃদ্ধির কথা বললেন। বললেন না, সারা বছরে তা ৬.৭%। তাঁর জমানায় সর্বনিম্ন।’’ সূর্যেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘কেন হিসেবের পদ্ধতি বদলানো সত্ত্বেও বৃদ্ধি কমল? নোট বাতিল ও জিএসটি-র জন্য?’’ নোটবন্দির পরে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশে পৌঁছনোর কথা বলেছিলেন। সেই ‘অচ্ছে দিন’ এখনও অধরা। ফলে অনেকের মত, বৃদ্ধি দুই অঙ্কে পৌঁছনোর স্বপ্ন কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE