পাঠকের মানসিক চাহিদা পূরণের অন্যতম মাধ্যম হল সাহিত্য। সাহিত্যের বিভিন্ন বই কাঁথির পাঠকের মননের কাছে তুলে ধরার সেতুবন্ধন হল আজ। বৃহস্পতিবার কাঁথিতে আনন্দ পাবলিশার্স-এর নতুন পুস্তক বিপণির উদ্বোধন করে এ কথা বলেন কাঁথি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী প্রার্থনানন্দ।
উল্টোরথের দিনে কাঁথি শহরের উদয়ন সিনেমা রোডে নতুন বিপণির উদ্বোধন করে স্বামী প্রার্থনানন্দ বলেন, ‘‘আধুনিক যুগে টিভি, ইন্টারনেটেও বই পড়ার সুযোগ রয়েছে। তাতে পাঠকের সাহিত্যের পরিতৃপ্তি আসে না, যে পরিতৃপ্তি বই পড়ার মাধ্যমে পাওয়া যায়।’’
উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই উপচে পড়ে ভিড়। কেউ ফেলুদা, কেউ শীর্ষেন্দু আবার কেউ বা উপন্যাস সঙ্কলনে মন দিলেন। ‘নবাবি আমলের মুর্শিদাবাদ’ বইটি কিনলেন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হরিপদ মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দিনের অভাব আজ পূরণ হল। নিজের শহরে নিজের পছন্দ মতো ‘আনন্দ’-র বই কেনার এমন সুযোগ আগে ছিল না। সেই সুযোগ আসায় কাঁথির পাঠককূল আজ সত্যিই আনন্দিত।’’
দেশ পত্রিকার সুবর্ণজয়ন্তী গ্রন্থ সঙ্কলন, অম্লান দত্তের ‘শান্তি-স্বরাজ-সংস্কৃতি’, ‘যে কথা বলিতে চাই’-সহ বেশ কয়েকটি বই কিনেছেন স্কুল শিক্ষক নন্দগোপাল পাত্র। তাঁর কথায়, “বই ছাড়া মানুষের মননের বিকাশ অসম্ভব। বই-ই মানুষের মানসিক চাহিদা পূরণ করতে পারে। এতদিন ‘আনন্দ পাবলিশার্স-এর বইয়ের জন্য অর্ডার দিয়ে বই পেতে অপেক্ষা করতে হত। এখন কাঁথি শহরেই নিজেই নিজের পছন্দ মতো বই বেছে কেনার সুযোগ হওয়ায় অনেকদিনের চাহিদা মিটল।’’
প্রথম দিনই ভি়ড় বইপ্রেমীদের ।ছবি: সোহম গুহ।
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের ‘পান্ডব গোয়েন্দা’ বই কিনলেন কলেজ ছাত্রী মিমোশা ঘোড়ই। তিনি বলেন, ‘‘কিশোর উপন্যাসের বই পড়তে ভাল লাগে। ভবিষ্যতে ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কুর বই কেনার ইচ্ছে রয়েছে।’’ কাঁথি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্বপ্নারানি মণ্ডল, কাঁথি মডেল ইন্সটিটিউশন স্কুলের শিক্ষক প্রমথেশ মণ্ডল, বেসরকারি সংস্থার কর্মী আশিস সিংহ, তরুণ ব্যবসায়ী শুভ্র সামন্তরাও একই কথা বললেন। প্রত্যেকের মতে, এই শহরে এই ধরনের বিপণির খুব দরকার ছিল।
আনন্দ পাবলিশার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর মিত্র জানান, এটি তাঁদের ৪৫তম বিপণি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দ্বিতীয়। প্রায় ৩০০০ টাইটেলের বই মিলবে এখানে। সিগনেট প্রকাশিত নানা বইও আনন্দ-বিপণি থেকে পাওয়া যাবে। কাঁথি বিপণির পক্ষে দেবব্রত দত্ত জানান, বই ছাড়াও মিলবে ফেলুদা বা প্রফেসর শঙ্কুর ছবি দেওয়া টি-শার্টও। এ ছাড়াও বিভিন্ন মূল্যের ‘আনন্দ উপহার’ (গিফট কুপন)-ও পাওয়া যাবে। তা দিয়ে সহজেই কেনা যাবে পছন্দের বই। এ দিন বিপণির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তরুণকান্তি মহাপাত্র, রমেন সিংহ, আইনজীবী অপূর্ব মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টরা। প্রত্যেকেই ব্যস্ত ছিলেন বই দেখতে। আলাপচারিতাও বই নিয়ে। সৌজন্যে এই নতুন বিপণি।