Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইচ্ছে করে এক কোটির বেশি কর বাকি রাখলে নাম প্রকাশ

প্রধানমন্ত্রী আয়কর অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, কর মেটানোর পদ্ধতি সহজ করতে হবে। কিন্তু ততটাই কঠিন করতে হবে করফাঁকি দেওয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৮:১০
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী আয়কর অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, কর মেটানোর পদ্ধতি সহজ করতে হবে। কিন্তু ততটাই কঠিন করতে হবে করফাঁকি দেওয়া।

চলতি অর্থবর্ষে ইচ্ছাকৃত করফাঁকি রুখতে প্রয়োজনে গ্রেফতার ও আটকের নির্দেশ দিয়েছিল আয়কর দফতর। কিন্তু তার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে যাতে আতঙ্ক না-ছড়ায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে তা নিশ্চিত করতে আয়কর দফতর জানিয়ে দিল, আয়কর আইনে গ্রেফতারির বিধান থাকলেও একেবারে বিরল ঘটনাতেই সেই রাস্তায় হাঁটা হবে।

গত সপ্তাহে আয়কর ও শুল্ক দফতরের অফিসারদের যৌথ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, আয়করদাতাদের বন্ধু হতে হবে। আয়কর দফতরের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার অভাব মেটাতে হবে। ওই সম্মেলনেই চলতি অর্থবর্ষের জন্য যে ‘স্ট্র্যাটেজি পেপার’ বিলি হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল, করফাঁকি রুখতে আয়কর অফিসাররা যেন গ্রেফতার বা আটকের পথে হাঁটতে দ্বিধা না করেন। কারণ আয়কর আইনেই সেই বিধান রয়েছে।

আজ ওই অ্যাকশন প্ল্যান প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠে যায়, তা হলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কী হল? তিনি তো আয়কর দফতরকে আতঙ্ক ছড়াতে বারণই করেছিলেন। এর পরেই মাঠে নেমে পড়ে অর্থ মন্ত্রক। মন্ত্রকের কর্তারা আয়কর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর অর্থ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়ে দেন, আয়কর দফতর এমন কোনও বিবৃতি দিতে চায়নি। বকেয়া কর আদায় করতে গ্রেফতারি বা আটকের বিধান আয়কর আইনে রয়েছে। অফিসারদের সেই ক্ষমতাও রয়েছে। তা সত্ত্বেও একেবারে বিরল ঘটনাতেই এই ক্ষমতা কাজে লাগানো হয়।

তা হলে সাধারণ ভাবে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? আয়কর দফতরের বক্তব্য, ইচ্ছাকৃত কর ফাঁকি রুখতে প্যান কার্ড বাতিল করে দেওয়া, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি বন্ধ করা এবং সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ না-পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। করফাঁকির ঘটনা অর্থ মন্ত্রককে জানাবে আয়কর দফতর। প্যান কার্ড বাতিল হলে ওই ব্যক্তির পক্ষে সম্পত্তির কেনাবেচাও সম্ভব হবে না। অপরাধীর নাম ও অন্যান্য তথ্য গোটা দেশের আয়কর দফতরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। যাঁদের ২০ কোটি টাকার বেশি কর বকেয়া রয়েছে, তাঁদের নাম প্রকাশ করে দেওয়ার কাজ আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১ কোটি টাকার বেশি কর বকেয়া হলেই নাম-ধাম প্রকাশ করে দেওয়া হবে।

মূল ‘অ্যাকশন প্ল্যান’-এর সুর অবশ্য আরও কড়া ছিল। একই ব্যক্তির বারবার চালাকি করে করফাঁকি দেওয়ার ঘটনা বাড়ছে দেখে আয়কর দফতর বলেছিল, আইনে করফাঁকির জন্য তিন মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে। গ্রেফতারির ক্ষমতা কাজে লাগানোর জন্য অফিসারও আছেন। এই বকেয়া আদায় দফতরটিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। করফাঁকির ক্ষেত্রে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও এক বছরের মধ্যে তা বিক্রি করে দেওয়ার উপরেও জোর দেওয়ার হয়। গোটা অর্থ বছরের জন্য এই ‘স্ট্র্যাটেজি পেপার’-কেই বেদবাক্য ধরে নিয়ে কাজ করেন আয়কর অফিসাররা। তা হলে কি এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কোনও সঙ্গতিই ছিল না?

অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষকর্তাদের ব্যাখ্যা, একেবারেই তা নয়। বকেয়া করের মামলাগুলি যে ইচ্ছাকৃত কর ফাঁকির ঘটনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হলেই কর আদায় অফিসারদের মাঠে নামানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

people evade one crore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE