Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সৌদি তেল শোধনাগারে জঙ্গি হানার জের, পেট্রল, ডিজেলে কি হিসেব চৌপাট!

ভারতে পেট্রল, ডিজেলের দাম মূলত বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ও ডলারের বিনিময় মূল্যের ভিত্তিতে বাড়ে-কমে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

সামনেই পুজো। কিন্তু শনিবার সৌদি তেল শোধনাগারে জঙ্গি হানার জেরে আচমকা চোখরাঙানি পেট্রল, ডিজেলের দামবৃদ্ধির। লাগামছাড়া ঘাটতির জেরে দেশের অর্থনীতির অনেক হিসেবও চৌপাট হতে পারে। কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, আতঙ্কের কারণ দেখছে না তারা।

ভারতে পেট্রল, ডিজেলের দাম মূলত বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ও ডলারের বিনিময় মূল্যের ভিত্তিতে বাড়ে-কমে। সেই হিসেবে মাসের গোড়ায় কিছুটা কমলেও কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত পেট্রলের দর লিটারে বেড়েছে ৪৫ পয়সা। ডিজেল ৪৯ পয়সা। মঙ্গলবার এই দুই জ্বালানির দাম লিটারে যথাক্রমে ৭৪.৮৯ টাকা এবং ৬৭.৯৯ টাকা। এই অবস্থায় উপদেষ্টা সংস্থা ‘কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইকুইটিজ়ের’ আশঙ্কা, সৌদি কেন্দ্রে হামলার জেরে অশোধিত তেল ব্যারেলে ১০ ডলার বাড়লে, ভারতেও দাম বাড়তে পারে লিটারে ৫-৬ টাকা। এয়ার ইন্ডিয়ার আশঙ্কা, অশোধিত তেলের দাম বাড়লে তাদের জ্বালানি খরচ মাসে ৫০ কোটি টাকা বাড়বে।

এ দিকে, দেশের বাজারে চাহিদার আকাল। জ্বালানির দাম বাড়লে চাহিদায় ভাটা বাড়বে, মাথা চাড়া দিতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। কারণ, ডিজেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হলে, প্রায় সমস্ত পণ্য পরিবহণের খরচ বাড়ে। দর বাড়ে জিনিসপত্রের। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের ভোটের মুখে যা মোদী সরকারের কাছে সুখবর নয়।

আবার ভারতের ৮০% অশোধিত তেল আসে বিদেশ থেকে। ব্যারেলে দর ১ ডলার বাড়লেই আমদানির খরচ বাড়ে ১০,৭০০ কোটি টাকা। ফলে এখন ওই দাম চড়তে থাকলে, বাণিজ্য ও চলতি খাতে ঘাটতিতে রাশ রাখা কঠিন হবে। রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রায় বেঁধে রাখাও শক্ত হবে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসও আজ জানান, সৌদি অ্যারামকোর (সৌদি আরবের সরকারি তেল সংস্থা) উৎপাদন অর্ধেক কমলে বিশ্বে অশোধিত তেলের জোগান ৫% কমে যাওয়ার কথা। সেই পরিস্থিতিতে ঘাটতিতে রাশ রাখা কঠিন, মানছেন তিনিও। সরকারের অবশ্য দাবি, তেল সংস্থাগুলি গত বৃহস্পতিবার ৬০.০৫ ডলারে তেল কিনেছে। আর বাজেটে ওই দর ধরে রাখা হয়েছে ৬৫ ডলার পর্যন্ত। ফলে ঘাটতি সহজে মাত্রাছাড়া হবে না। কিন্তু ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা বাঁধা হয়

জিডিপি-র সাপেক্ষে। বৃদ্ধি তলানিতে। কর আদায় আশানুরূপ নয়। এই অবস্থায় আচমকা আমদানি এবং ভর্তুকির খরচ বাড়লে, ঘাটতি কী ভাবে সীমা-বদ্ধ থাকবে, সে প্রশ্ন থাকছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE