E-Paper

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, কল্যাণীতে চালু হচ্ছে পাইপবাহিত রান্নার গ্যাসের পরিষেবা

পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমানে ইতিমধ্যেই সীমিত সংখ্যক বাড়িতে পাইপে গ্যাস পাঠায় ইন্ডিয়ান অয়েল ও আদানিদের যৌথ সংস্থা। নদিয়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার খুব সামান্য অঞ্চলে তা দেয় হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম।

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:৩৭

—প্রতীকী চিত্র।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে। সব ঠিক থাকলে ১৫ দিনের মধ‍্যে বৃহত্তর কলকাতা এলাকায় এই প্রথম চালু হতে চলেছে পাইপবাহিত রান্নার গ‍্যাস পরিষেবা। আপাতত স্থির হয়েছে, কল‍্যাণী পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের একশোর মতো বাড়িতে পাইপে রান্নার গ্যাস যাবে এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ‍্যে। সে জন্য আজ, রবিবার সেখানকার রেগুলেটিং স্টেশনে (যেখান থেকে গ‍্যাসের গতি ও চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়) পরীক্ষামূলকভাবে গ‍্যাস চার্জ করা হবে। দিন দুয়েকের মধ‍্যে পাইপলাইন পরীক্ষার জন্য ২-৪টি বাড়িতে এক বার গ‍্যাস পাঠানো হবে। বড় সমস্যা না হলে ২০-২২ নভেম্বর নাগাদ বাণিজ্যিক পরিষেবা চালু হবে বলে বেঙ্গল গ্যাস সূত্রের খবর। কলকাতা শহর ও সংলগ্ন এলাকায় পাইপে গ‍্যাস পৌঁছনোর দায়িত্বে রয়েছে তাদেরই হাতে। বর্তমানে এই পাইপে গ্যাসের দাম ঘনমিটারে ৫১ টাকা। নিয়মিত তা পর্যালোচনা হয়। গ্রাহক যতটা গ্যাস ব্যবহার করবেন, ততটার জন্যই তাঁকে দাম দিতে হবে।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমানে ইতিমধ্যেই সীমিত সংখ্যক বাড়িতে পাইপে গ্যাস পাঠায় ইন্ডিয়ান অয়েল ও আদানিদের যৌথ সংস্থা। নদিয়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার খুব সামান্য অঞ্চলে তা দেয় হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম। বেঙ্গল গ্যাসের তরফে বর্তমানে নিউটাউন, শ্রীরামপুর ও কসবার চারটি আবাসনে পরীক্ষামূলক ভাবে পাইপে গ‍্যাস যায়। তবে কল্যাণীতে চালু হলে সেটাই হবে কলকাতার শহরতলিতে প্রথম বাণিজ্যিক পরিষেবা। বেঙ্গল গ্যাসের সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায় বলেন, “কিছু প্রশাসনিক জটিলতায় গ্যাস পাঠাতে দেরি হয়েছে। এখন কল্যাণী পুরসভার বিবিধ ওয়ার্ডে কাজ চলছে। সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই শতাধিক বাড়িতে পরিষেবা দিতে পারব বলে আশা।’’

১৯ নম্বর ওয়ার্ডে পরিষেবা শুরুর পরে ৯, ১১, ১২ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৫০০ বাড়িতে মার্চের মধ‍্যে তা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বেঙ্গল গ্যাসের। যে ১০০টি বাড়িতে প্রথমে পাইপে গ্যাস যাবে, তাদের অধিকাংশতেই মিটার বসানো হয়েছে। কল‍্যাণীর পরে সংলগ্ন গয়েশপুর পুর এলাকার ৫০০ বাড়িতেও এই পরিষেবা আগামী বছরের শুরুর দিকে চালু হতে পারে বলে আশা সংস্থার।

যদিও খাস কলকাতায় কবে বাড়িতে তা পৌঁছবে, তার উত্তর দিতে পারছে না বেঙ্গল গ্যাস। তাদের দাবি, রাস্তায় পাইপ বসানোর যে খরচ কলকাতা পুরসভা ধার্য করেছে, তা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে সাকুল‍্যে ৪ কিমি-র মতো লাইন বসেছে যাদবপুর থানা থেকে অভিষিক্তা পর্যন্ত। তার উপরে এখনও কাঁচড়াপাড়া, খড়দহ-সহ একাধিক পুর এলাকায় পাইপ বসানোর ছাড়পত্র মেলেনি বলে বিক্ষিপ্তভাবে কাজ থমকে। যেখানে ছাড়পত্র আছে, সেখানে কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। সংস্থা সূত্রে খবর, আপাতত কল‍্যাণী থেকে কলকাতার আগে পর্যন্ত পরিষেবা চালুতে জোর দেওয়া হচ্ছে। গঙ্গার অপর প্রান্তে হুগলির মগরা থেকে হাওড়া পর্যন্ত পাইপলাইন পাতা চলছে। ইতিম‍ধ‍্যেই এই সব এলাকার ৫০০০-এর বেশি বাড়িতে গ‍্যাসের মিটার বসেছে। তাঁর আশা, এক-দেড় বছরে শহরের গ‍্যাস মানচিত্র অনেকটাই স্পষ্ট হবে।

সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, ২০১৯ সালে কলকাতা শহর ও শহরতলিতে গৃহস্থালি, শিল্প ও পরিবহণে ব্যবহারের জন‍্য পাইপে গ্যাস পৌঁছতে তৈরি করা হয়েছিল বেঙ্গল গ্যাস। করোনায় সব কাজ স্তব্ধ হয়ে যায়। ২০২৩-এর মাঝামাঝি থেকে পুরোদমে ফের কাজ শুরু হয়। তার আড়াই বছরের মধ‍্যেই শহরতলিতে বাড়িতে রান্নার গ‍্যাস পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে, যা ইতিবাচক ঘটনা বটে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalyani indian oil Hindustan Petroleum

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy