—প্রতীকী চিত্র।
খুচরো বাজারে টানা চার মাস ধরে মূল্যবৃদ্ধির হার নেমে ৪.২৫ শতাংশে দাঁড়ানোর খবর এসেছে আগেই। বুধবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে প্রকাশ, গত মাসে পাইকারি বাজারেও জিনিসপত্রের দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সরাসরি কমে শূন্যের আরও নীচে চলে গিয়েছে। এপ্রিলে সেখানে মূল্যহ্রাস হয়েছিল (-)০.৯২%। মে মাসে হল (-)৩.৪৮%। সরকারি হিসাবে দাবি, বেশ কয়েক বছর পরে পাইকারি দাম এতটা কমল। মূলত খাদ্য, জ্বালানি এবং কারখানায় তৈরি পণ্য সস্তা হওয়াতেই যা সম্ভব হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, খুচরো বাজারে দাম বৃদ্ধির হার আগের থেকে কমেছে ঠিকই। তবে ক্রেতার পকেটে চাপ কমেনি। তাদের প্রশ্ন, খুচরো দামে পাইকারির প্রতিফলন ঘটবে কবে? বিশেষত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলি কেনাকাটার খরচ কমলে সাধারণ মানুষের একটু সুরাহা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য বলছেন, পরিসংখ্যান দেখে পাইকারি বাজারে দাম যতটা কমেছে বলে মনে হচ্ছে, আসলে ততটা হয়নি। গত বছরের মে মাসে সেখানে মূল্যবৃদ্ধি চড়েছিল ১৬.৬৩ শতাংশে। এত উঁচু ভিতের সঙ্গে তুলনায় এ বারের হার বেশি কম দেখাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশীল পোদ্দার বলেন, “চাহিদার অভাবে বাস্তবে বাজার খুবই খারাপ। তাই ব্যবসায়ীরা কম দামে জিনিস ছেড়ে দিচ্ছেন। তাতে দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু একে প্রকৃত অর্থে দাম কমে যাওয়া বলা যায় না।’’ অনেকটা একই সুর পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের গলায়। তিনি বলেন, “চাহিদা কম, তাই দাম কিছুটা কমেছে। পেট্রল-ডিজ়েলের দর চড়ে থাকলে কোনও বাজারেই জিনিসপত্রের সস্তা হওয়া কঠিন। তেলের খরচ কমানোর ব্যবস্থা না করলে হালের এই সুরাহা স্বল্প মেয়াদি হতে পারে। ফলে খুচরো বাজার নিয়েও এখনই খুব বেশি আশা না করা ভাল।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের দাবি, ‘‘খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে। দাম কমেনি। সেখানে পাইকারি বাজার দরের প্রভাব পড়তে সময় লাগে।’’
বার্কলেজ়-এর এমডি রাহুল বাজোরিয়ার মতে, ‘‘খাদ্য, জ্বালানি এবং সেগুলির বাদ দিয়ে বাকি পণ্যগুলির পাইকারি দামের চাপ কমেছে। এতে উৎপাদকদের কাঁচামালের খরচ কমছে। কিন্তু খুচরো দামে তা প্রতিফলিত হতে অনেক সময় লাগছে কারণ, খুচরো মূল্যসূচক এবং পাইকারি মূল্যসূচক ভিত্তিক মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে দূরত্ব বেড়ে গিয়েছে।’’ তবে বাজোরিয়ার আশা খুচরো মূল্যবৃদ্ধি দ্রুত আরও নামবে। ফলে চলতি অর্থবর্ষে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সম্ভবত সুদের হার এক জায়গাতেই ধরে রাখবে। শীর্ষ ব্যাঙ্ক খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশের মধ্যে রাখতে চায়। বেশ কিছু দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে সেটা সম্ভব হলে সুদের হার কমানোর কথা ভেবে দেখা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy