২০১৪ সালের এপ্রিলে দেশে ১৪.৫২ কোটি এলপিজি সংযোগ ছিল। ন’বছরে ১৭ কোটি বেড়ে গত মার্চে তা হয়েছে ৩১.৩৬ কোটি। প্রতীকী ছবি।
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দূষণহীন রান্নার গ্যাসের ব্যবহারে জোর দিচ্ছে মোদী সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, গত ন’বছরে এলপিজি সিলিন্ডারের সংযোগ দ্বিগুণ পার করে পৌঁছেছে ৩১.২৬ কোটিতে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের দাম হাজার টাকা পার করা, ভর্তুকি ক্রমাগত কমে প্রায় শূন্যে নেমে আসা, উজ্জ্বলা যোজনায় অনেক গ্রাহকের দ্বিতীয় সিলিন্ডার না নিয়ে কাঠ-পাতার দূষিত জ্বালানিতে ফিরে যাওয়া নিয়ে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালের এপ্রিলে দেশে ১৪.৫২ কোটি এলপিজি সংযোগ ছিল। ন’বছরে ১৭ কোটি বেড়ে গত মার্চে তা হয়েছে ৩১.৩৬ কোটি। মোদী সরকারের দাবি, আগে গ্যাসের জন্য আবেদন জানানোর পরে সংযোগ পেতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগত। সিলিন্ডার পেতে লাগত ৭-১০ দিন। আর এখন আবেদনের কার্যত সঙ্গে সঙ্গেই সংযোগ মেলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিলিন্ডার চলে আসে এক দিনের মধ্যে। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের মধ্যে দূষণহীন রান্নার জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে ২০১৬ সালের ১ মে চালু হয় উজ্জ্বলা যোজনা। যেখানে সংযোগের জন্য দিতে হয় না টাকা। এই খাতে অন্তত ১৬০০ টাকা সাশ্রয় হয় তাঁদের। কোনও টাকা জমাও রাখতে হয় না। তার উপরে প্রথম সিলিন্ডারটি পাওয়া যায় পূর্ণ ভর্তুকিতে। এই সমস্ত পদক্ষেপের ফলেই দূষণহীন গ্যাস সংযোগ এই জায়গায় পৌঁছেছে বলে দাবি কেন্দ্রের। উজ্জ্বলা যোজনায় গ্রাহকের সংখ্যা এখন ৯.৫৮ কোটি।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ এবং বিরোধীদের বক্তব্য অবশ্য অন্য। তাদের অভিযোগ, শুকনো পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবের ফারাক যথেষ্ট। কলকাতায় যেমন ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১১২৯ টাকা। কিন্তু ভর্তুকি জমি ছুঁয়েছে। শহরের বেশির ভাগ জায়গায় তা এখন মাত্র ১৯ টাকা। কোনও কোনও জায়গায় শূন্য। অথচ বিশ্ব বাজারে গ্যাসের দাম কমলেও ভারতে গ্রাহকেরা সেই সুবিধা পাননি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে উজ্জ্বলা যোজনার গ্রাহকদের একটা অংশ অর্থের অভাবে দ্বিতীয় সিলিন্ডার কিনে উঠতে পরেননি। ফলে নিখরচার সংযোগের মূল উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কংগ্রেসের প্রশ্ন, রাজস্থান সরকার যদি ৫০০ টাকায় গ্যাস দিয়ে বাকি খরচ নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে পারে, তা হলে কেন্দ্র তা পারছে না কেন?
এই বিষয়ে অবশ্য কেন্দ্রেরও যুক্তি রয়েছে। তাদের দাবি, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষদের আর্থিক চাপ কমাতেই উজ্জ্বলা যোজনায় নিয়ে আসা হয়েছে ৫ কেজির সিলিন্ডার। এই প্রকল্পের গ্রাহকদের সুবিধার জন্য সম্প্রতি বছরে ১২টি পর্যন্ত ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারে ২০০ টাকা করে ভর্তুকির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজে নিখরচায় দেওয়া হয়েছে ১৪ কোটি সিলিন্ডার। উজ্জ্বলা যোজনার গ্রাহকদের বছরে সিলিন্ডার ব্যবহারের সংখ্যা ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের ৩.০১ থেকে বেড়ে ২০২১-২২ সালে হয়েছে ৩.৬৬।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy