বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুয়ায়ী অর্থনীতির হাল ফেরানোর জন্য শুধু পরিকাঠামো খাতেই চলতি দশকের শেষে ভারতের প্রয়োজন হবে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার, দাবি প্রাক্তন ক্লিনটন প্রশাসনের অন্যতম কর্তা রেমন্ড ভিকেরি-র। তাঁর মতে, সে ক্ষেত্রে ভারতকে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের উপর নির্ভর করতেই হবে।
প্রসঙ্গত, প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি নিয়ে গোটা দেশেই নানা স্তরে আপত্তি রয়েছে। এমনকী বহু পণ্যের খুচরো ব্যবসায় এখনও ছাড় পায়নি বহুজাতিক সংস্থা। পশ্চিমবঙ্গেও একই অবস্থা। পাশাপাশি বিমা, প্রতিরক্ষা, সব ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আপত্তি রয়েছে সর্বত্রই। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ভিকেরির এই মন্তব্য।
ভারত চেম্বার ও কলকাতায় মার্কিন কনস্যুলেট আয়োজিত ভারত-মার্কিন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও গাঁটছড়া নিয়ে সম্প্রতি এক সভার পরে রেমন্ড বলেন, ‘‘রাস্তা, বিদ্যুৎ, আবাসন, স্কুল, হাসপাতালের মতো পরিকাঠামোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশেরই বিপুল লগ্নি প্রয়োজন। দেশের মধ্যে থেকে এই বিপুল অর্থ জোগাড় সম্ভব নয়। তাই বিদেশি লগ্নি দরকার।’’ না-হলে দুই অঙ্কের আর্থিক বৃদ্ধির হার অর্জন করা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তিনি। কিন্তু ভারত বা পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক মহলেই এ নিয়ে অনেক আপত্তি রয়েছে। ফলে বাস্তবে এই লগ্নি কতটা সম্ভব, সে প্রশ্নের জবাবে রেমন্ড অবশ্য জানান, এ নিয়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বাড়ছে। সেই সূত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গাপুর বা লন্ডন সফরের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি।
কিন্তু বহুপণ্যের খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির জেরে ছোট ব্যবসায়ীরা মার খাবেন বলে আশঙ্কা অনেকেরই। তবে রেমন্ডের দাবি, এ ক্ষেত্রে কোনও রকম সংরক্ষণ করে দেশের আর্থিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বরং বাজারে প্রতিযোগিতা থাকলেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উন্নতি সহজ হবে। যেমন তাঁর মতে, কৃষিতে বিদেশি লগ্নি এলে তার ফলে হিমঘরের মতো আধুনিক পরিকাঠামো গ়ড়ে উঠবে। যার সুফল পাবেন কৃষকই।