শুক্রবার ঋণনীতি ঘোষণা করবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তার আগে টানা তৃতীয় বার সুদ কমবে কি না, কমলে কতটা কমতে পারে, এই সব নিয়ে জল্পনা চড়ছে দেশ জুড়ে। গত ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিলে ২৫ করে মোট ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানো হয়েছিল। সোমবার স্টেট ব্যাঙ্কের আর্থিক গবেষণা বিভাগ তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, এ বার একলপ্তেই তা ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে আরবিআই। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এবং দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারকে ঠেলে তোলার তাড়া আছে। যা দ্রুত ঋণে সুদ না কমলে হবে না। বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য ধারণা, তাড়াহুড়ো করে ঝুঁকি নেবে না শীর্ষ ব্যাঙ্ক। বিশ্ব বাজারে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক জটিলতার কারণে মূল্যবৃদ্ধির ফের মাথা তোলার আশঙ্কা রয়েছে। কাজেই ২৫ বেসিস পয়েন্টের বেশি সুদ কমবে না।
আরবিআই টানা দু’বার সুদ কমানোয় রেপো রেট (যে সুদে তারা ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) হয়েছে ৬%।এখন গড়ে ব্যাঙ্কগুলির মোট ঋণের ৬০.২ শতাংশই রেপোর সঙ্গে যুক্ত। ৩৫.৯% ঋণে সুদ ধার্য হয় তহবিল সংগ্রহের খরচের ভিত্তিতে নির্ধারিত সুদ (এমসিএলআর) অনুযায়ী। তবে সুদ কমলেও ঋণের চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, ‘‘সুদ কমলে বাড়ি, গাড়ি ভোগ্যপণ্য ইত্যাদির চাহিদা সাধারণত বাড়ে। তবে শিল্পে লগ্নি কতটা বাড়বে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, তার জন্য জরুরি সার্বিক ভাবে দীর্ঘ মেয়াদে চাহিদা বৃদ্ধি।’’ ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছাঁটাই নিয়েও সংশয়ী বন্ধন ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ সান্যাল। তাঁর কথায়, “ধারণা ২৫ বেসিস পয়েন্টই কমবে। তবে সুদ কমলেও চটজলদি ঋণের চাহিদা বাড়বে না। ব্যাঙ্কগুলিও ঋণ বৃদ্ধির তুলনায় তা ফেরত পাওয়া নিশ্চিত করতে বেশি আগ্রহী।’’
পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক বলেন, “ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি শুধু সুদ কমানোর উপর নির্ভর করে না। দেশ-বিদেশের নীতি, মুদ্রার বিনিময় মূল্যের মতো বিষয়গুলিও প্রভাবিত করে। যা এখন ভারতের অনুকূলে তেমন নেই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)