—ফাইল চিত্র।
যে সব ব্যক্তি নীরব মোদীর মতো ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, তাঁদের সঙ্গেও ব্যাঙ্ক আপস করে নিতে পারবে। যাঁরা বিজয় মাল্যের মতো ইচ্ছাকৃত ভাবে ব্যাঙ্কের দেনা শোধ করেননি, আপস করা যাবে তাঁদের সঙ্গেও।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এই নতুন নির্দেশিকা জারি করতেই সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, দেশের আর্থিক অপরাধী ও দেশ ছেড়ে পলাতকদের মোদী সরকার এতদিন ‘নিরাপদে পলায়ন’-এর ব্যবস্থা করেছে। এ বার নিরাপদে আপস করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।আরবিআই অবশ্য বলছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে শোধ না করা ঋণ বা প্রতারণার ফলে ব্যাঙ্কের কোটি কোটি টাকা আটকে রয়েছে। আপস করে অন্তত কিছুটা অর্থ উদ্ধার করা যাবে। সে কারণেই ব্যাঙ্কের বোর্ডকে এই বিষয়ে নীতি তৈরির কথা বলা হয়েছে। পরিচালন বোর্ডের সম্মতি নিয়ে ব্যাঙ্ক এই ধরনের আপসে যেতে পারবে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, এর অর্থ হল জনতার টাকা লুট করা ও ব্যাঙ্কের প্রতারকদের আর আর্থিক অপরাধী হিসেবে ধরা হবে না। তাঁদের সঙ্গে আপস করে তাঁদের প্রতারণা মেনে নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়। এক বছর পরে ব্যাঙ্ক ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ও প্রতারণায় অভিযুক্তদের আবার ঋণ দিতে পারবে বলেও জানিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। এখন দেখা যাচ্ছে, অনেকখানি খাবেন। খাওয়াবেনও।’’
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের এই নির্দেশিকার পিছনে সরকারি ভাবে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এতে অনাদায়ি ঋণ উদ্ধার করা, প্রতারণায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের খরচ বাঁচবে। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এতে ব্যাঙ্কে জমা রাখা আমজনতার আরও অর্থ জলে যেতে পারে। কারণ ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঋণ শোধ করেননি। তাদের সামান্য কিছু অর্থ শোধ করে পুরো দায় থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
মোদী জমানায় শিল্পপতি বা কর্পোরেট সংস্থার কোটি কোটি টাকার ঋণ মকুব করে দেওয়া হয়েছে বলে আগেও অভিযোগ উঠেছে। মোদী সরকার পাল্টা যুক্তি দিয়েছে, কোনও ঋণ মকুব করা হয়নি। শুধু হিসেবের সুবিধার জন্য অনুৎপাদক সম্পদের খাতা কিছু ঋণ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি হিসাবে, গত ১০ বছরে এই অনুৎপাদক সম্পদের খাতা থেকে মুছে দেওয়া ঋণের পরিমাণ ১৩ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, এই বিপুল পরিমাণ ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy