গত চার বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে নেমে এসেছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার। গত অর্থবর্ষে তা থমকে গিয়েছে ৬.৫ শতাংশে। চলতি বছরেও তার উপরে ওঠার আশা আছে বলে মনে করছে না রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। তাই সেই বৃদ্ধিতে গতি আনাকেই শুক্রবার পাখির চোখ করল তাদের ঋণনীতি। আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্রর বার্তা, আন্তর্জাতিক আবহ শুল্ক যুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত। এই পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়িয়ে দেশের আর্থিক বৃদ্ধিকে ঠেলে তুলতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। লক্ষ্য সেই হারকে ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে রাখা। ঋণনীতির মাধ্যমে তাই লগ্নি এবং চাহিদা বাড়ানো হচ্ছে।
এই লক্ষ্যে শুক্রবার ঋণনীতিতে জোড়া পদক্ষেপ করেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এক দিকে, রেপো রেট (যে সুদে ব্যাঙ্কগুলিকে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণ দেয়) ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে করেছে ৫.৫০%। উদ্দেশ্য, সুদের হার কমিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থের সংস্থান। যা দিয়ে কেনাকাটা করলে বাজারে বাড়বে চাহিদা। কম সুদে ঋণ পেলে লগ্নি করবে শিল্প। চাঙ্গা হবে উৎপাদন। অন্য দিকে, ঋণ দিতে ব্যাঙ্কগুলি যাতে তহবিলের সমস্যায় না পড়ে, তার জন্য ১০০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে নগদ জমার অনুপাত। যা আগে ছিল মোট আমানতের ৪%। এখন হল ৩%। এই টাকা ব্যাঙ্কগুলিকে বাধ্যতামূলক ভাবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কে জমা রাখতে হয়। এর ফলে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা পাবে তারা। যা ঋণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারবে।
সঞ্জয় জানান, বিশ্বের আর্থিক বাজার শুল্ক যুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছে। কিন্তু ভারত রাজনৈতিক এবং আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। ভাল আর্থিক ফল করছে বিভিন্ন সংস্থা। যদিও আর্থিক বৃদ্ধির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তাকমছে। তবে এ বছর প্রত্যাশা অনুযায়ী ভাল বর্ষা হলে চাহিদা বাড়বে। এই অবস্থায় এ বারের ঋণনীতি তৈরি হয়েছে বৃদ্ধিতে জ্বালানি ঢালতেই।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)