Advertisement
E-Paper

ভারত চাইলে ফিরতে রাজি, বার্তা রাজনের

রাজনের মত, আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জিডিপি সরাসরি ৪%-৫% সঙ্কোচনের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫০
রঘুরাম রাজন। —ফাইল চিত্র

রঘুরাম রাজন। —ফাইল চিত্র

হ্যাঁ। রাজি— সোজাসাপ্টা এই উত্তরই শোনা গেল রঘুরাম রাজনের মুখে। ভারতের অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর পরামর্শ দেওয়ার জন্য তাঁর দেশে ফেরার প্রসঙ্গে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন যে গভর্নর এক সময়ে দেশ ছেড়েছিলেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের কর্ণধার পদে তিন বছরের মেয়াদ ফুরোতেই। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রাজনের এই জবাব তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত এমন সময়ে, যখন সারা বিশ্ব মন্দার গর্তে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। রাজনেরও দাবি, বিশ্ব অর্থনীতি ইতিমধ্যেই মন্দার গ্রাসে। যে কারণে করোনা যুঝতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ১১ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার। যার অন্যতম সদস্য তিনি।

সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজন বলেন, করোনার সঙ্গে লড়াই করে ভারতের অর্থনীতিকে ছন্দে ফেরাতে তাঁকে ডাকা হলে ‘নিশ্চিত ভাবেই’ দেশে ফিরবেন। যে রাজন কিছু দিন আগেই বলেছিলেন, করোনার হাত ধরে যে সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে অর্থনীতি, তার থেকে বেরোতে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞদের তলব করা প্রয়োজন মোদী সরকারের। তাঁরা বিরোধী দলের হলেও। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই সমস্যা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হলে লাভ হবে না। চাই এমন ব্যক্তিদের, যাঁদের ২০০৮-০৯ সালের বিশ্ব মন্দা কাটিয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর পরেই এ বার রাজনের ফেরার এই বার্তা ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

রাজনের মত, আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জিডিপি সরাসরি ৪%-৫% সঙ্কোচনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যেও ভারত ও চিনের অর্থনীতি সামান্য বৃদ্ধির মুখ দেখবে বলে দেওয়া পূর্বাভাসও যথেষ্ট ভাল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

হুঁশিয়ারি

• অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় জর্জরিত ব্যাঙ্কগুলি কর্পোরেট সংস্থার বদলে ভরসা সাধারণ মানুষকে দেওয়া ঋণে। কিন্তু লকডাউনের ধাক্কায় কর্মী বা বেতন ছাঁটাই হলে, সেই ঋণও অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হতে পারে।

• গত ক’বছর ধরে দেশের আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখায় খামতি রয়েছে।

• শৃঙ্খলা ধরে রাখতে না-পারলে ভেঙে পড়বে আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র।

• সমস্যা বাড়তে পারে বিদেশি লগ্নি আরও বেশি করে ভারত ছাড়লে।

• হঠাৎ করে ঘোষণা করা লকডাউনে সমস্যা হয়েছে সংস্থাগুলির।

পরামর্শ

• সব চেয়ে আগে জরুরি সমস্যা কতটা গভীর তা বোঝা ও সেটা স্বীকার করা।

• সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গরিব, অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষের হাতে টাকা পৌঁছনো প্রয়োজন।

• গরিবদের কাছে খাদ্যশস্য যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

• নজর দিতে হবে অযথা ব্যয় বন্ধে। লগ্নিকারীদের বোঝাতে হবে যে ভারত আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।

• বিমা এবং ভাল ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে টাকা জোগানোয় জোর দিতে হবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে।

• ছোট শিল্পের হাতে টাকা পৌঁছে দিতে হবে।

রাজনের দাবি, ভারত গত ক’বছর ধরে আর্থিক শৃঙ্খলা ধরে রাখায় পিছিয়ে। এই অবস্থায় লগ্নিকারীদের বোঝাতে হবে যে কেন্দ্র ঘাটতি বেঁধে রাখতে দায়বদ্ধ। না-হলে বিপুল বিদেশি লগ্নি বেরিয়ে গেলে আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র ভেঙে পড়তে পারে। কল সেন্টারের মতো যে সব ক্ষেত্রে দেশীয় ও বিদেশি সংস্থাগুলি মিলে কাজ করে, তাদের পরিষেবা চালানোর পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি।

একই সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রশংসা করে প্রাক্তন গভর্নর বলেন, ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করেছে তাদের পদক্ষেপ। তবে অনুৎপাদক সম্পদের জেরে ব্যাঙ্কগুলি যে স্বস্তিতে নেই, তা-ও মনে করিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এই অবস্থায় কেন্দ্রের উচিত গরিবদের হাতে সরাসরি টাকা পৌঁছনো নিশ্চিত করা। বাজারে অর্থের জোগান বাড়াতে ছোট শিল্পের হাতে টাকা পৌঁছনো।

RBI IMF Raghuram Rajan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy