চিনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়া, ইটালি ও ইরানে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে শুনেই যেন বাজ পড়ল বাজারে। সোমবার বিশ্ব জুড়ে সব দেশের প্রতিটি শেয়ার বাজার পতন দেখল। যদিও করোনা আতঙ্কের কাঁপুনি চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। তবে এ দিন সেটা জাঁকিয়ে বসল আরও। ভারতে সেনসেক্স পড়ল এক ধাক্কায় ৮০৬.৮৯ পয়েন্ট। নিফ্টি ২৫১.৪৫। সূচক দু’টি থামল যথাক্রমে ৪০,৩৬৩.২৩ ও ১১,৮২৯.৪০ অঙ্কে। বিএসই-তে লগ্নিকারীরা এক দিনে খুইয়েছেন ৩.৭১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার মূলধন।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, নানা কারণে এমনিতেই শ্লথ বিশ্ব অর্থনীতি যে এ বার ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে আরও বিপদের মুখে, তা স্পষ্ট। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারও (আইএমএফ) সতর্ক করে বলেছে, করোনার জেরে বিশ্ব অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো আরও কঠিন হতে পারে। ইতিমধ্যেই এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে চিনের অর্থনীতিতে। যার প্রভাব কাটাতে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক ফুরিয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় অন্যান্য দেশে ভাইরাসের প্রভাব বাড়লে, তা হবে মারাত্মক। অবস্থা সামলানোই কঠিন হবে। এ দিন ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারকে টেনে নামিয়েছে সেই আশঙ্কাই।
পড়েছে টাকার দামও। এক লাফে ৩৪ পয়সা বেড়ে এক ডলার হয়েছে ৭১.৯৮ টাকা। তিন মাসের মধ্যে এতটা নীচে নামতে দেখা যায়নি টাকার দামকে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের ভয় যে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় আমদানি-রফতানির পথে বিরাট বাধা হতে পারে, তা পরিষ্কার। তার উপরে চিনের মতো এত বড় অর্থনীতি ধাক্কা খেলে, তার প্রভাব বইতে বাধ্য গোটা বিশ্ব। সেই ঝাপ্টা থেকে বাদ যাবে না ভারতও। পণ্য জোগান ব্যাহত হওয়ায় আর্থিক ক্ষেত্রে বড় মাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর বিরূপ প্রভাব ইতিমধ্যেই শিল্প ক্ষেত্রে পড়তে শুরু করেছে। বিশ্ব জুড়ে ওই সমস্যা বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। মূলধনী বাজার বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর থেকে মুক্তি পেতে সময় লাগবে। ফলে আগামী অর্থবর্ষেও ভুগতে পারে অর্থনীতি। মার খেতে পারে ফান্ডের লগ্নি।
পরিস্থিতি ঘোরালো দেখে ভারতের বাজারে ফের শেয়ার বেচছেন বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। এ দিন সেই বিক্রির অঙ্ক ছিল ১১৬০.৯০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় ভারতের পক্ষে একমাত্র সুখের কথা, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমা। করোনা আতঙ্কে চাহিদা কমায় ব্রেন্ট ক্রুড হয়েছে ব্যারেলে ৫৫ ডলার। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এতে দেশ কম দামে তেল কিনলে কিছুটা টাকা বাঁচবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy