গত দু’মাস শেয়ার বাজারের চোখ ছিল লোকসভা ভোটের দিকে। বুথফেরত সমীক্ষা, ফল, শপথ ও মন্ত্রিসভা গঠন— এ নিয়েই দোলাচল ছিল বাজারে। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ৪০ হাজারের গণ্ডি পার করেছে সেনসেক্স। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার দিনে শেষ এই নজির গড়েছিল সূচক। কিন্তু পরে তা পড়ে যায়। এখন ভোট পর্ব শেষে অর্থনীতির দিকে মন ফেরাচ্ছে বাজার। কিন্তু সেখানেও চিন্তা বাড়াচ্ছে শ্লথ বৃদ্ধি।
শুক্রবার সরকারি পরিসংখ্যান জানিয়েছে, ২০১৮-১৯ সালে দেশে বৃদ্ধি নেমেছে ৬.৮ শতাংশে। মোদীর প্রথম দফায় সর্বনিম্ন। আগের বছরে তা ছিল ৭.২%। আর শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫.৮%। ফলে চিনের কাছে দ্রুততম বৃদ্ধির দেশের তকমা হারিয়েছে ভারত। দেশে ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্ব দাঁড়িয়েছে ৬.১%। এপ্রিলে পরিকাঠামোয় বৃদ্ধি ২.৬%। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে অর্থনীতির ছবিটা মোটেই ভাল নয়। যা কেন্দ্রের চিন্তা বাড়াবে বলেই ধারণা। বাজারকে খুশি করেনি অর্থমন্ত্রী পদে নির্মলা সীমারামনের নাম ঘোষণাও। শুক্রবার তাঁর নাম জানার পরে পড়েছে সূচক।
গত অর্থবর্ষে উৎপাদন বৃদ্ধির হার কমেছে কৃষি ও শিল্প দু’ক্ষেত্রেই। বাজারে নগদের ঘাটতি থাকায় বেশ চাপে শিল্প। চাহিদায় ভাটার জেরে কমছে ভোগ্যপণ্যের বিক্রি। অনেকের মতে, এই অবস্থায় প্রথম থেকেই হাল ধরতে হবে কেন্দ্রকে। লগ্নি বাড়াতে হবে পরিকাঠামোয়। প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই অর্থনীতির বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সব মিলিয়ে আপাতত বেহাল অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষা করছে বাজার।
অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে বৃহস্পতিবার ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফের এক দফা সুদ কমাবে বলে ধারণা। অনেকের মতে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকায় তা কমতে পারে ৫০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত। রেপো রেট কমানো হলে সুদ কমতে পারে ঋণ ও জমায়। অর্থাৎ, চাইলে ২-৩ দিনের মধ্যেই সুদ নির্ভর প্রকল্পে লগ্নি করতে হবে।
৫ জুলাই পেশ হবে পূর্ণাঙ্গ বাজেট। আশা, চাহিদা বাড়িয়ে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে বাড়ানো হতে পারে করমুক্ত আয়ের সীমা। জোর দেওয়া হতে পারে কৃষি, পরিকাঠামো ও কর্মসংস্থান তৈরিতে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy