গত ১৭ মার্চ কলকাতার বাজারে প্রথমবার জিএসটি ছাড়াই ১ লক্ষ টাকার মাইলফলক ছুঁয়েছিল এক কেজি খুচরো রুপোর দাম। ঠিক ন’মাসের মাথায় বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর সেই ধাতুই পৌঁছে গেল ২ লক্ষ টাকায়। এক ধাক্কায় ৬৮০০ টাকা উঠে গড়ল নতুন নজির। কর নিয়ে তার দাম দাঁড়াল ২,০৬,০০০ টাকায়। রুপোর বাট ১,৯৯,৯০০ টাকা। জিএসটি-র হিসাব কষলে ২,০৫,৮৯৭ টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সোনার চড়া দামের কারণে তার বিকল্প হিসেবে রুপোর চাহিদা তো বেশ কয়েক মাস ধরেই বাড়ছিল সাধারণ মানুষের কাছে। তার উপরে লগ্নির গন্তব্য হিসেবে তাতে আগ্রহ এবং বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে তার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া বছরের শেষে গিয়ে ঠেলে তুলেছে রুপোর দামকে।
এ দিন কলকাতায় ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট খুচরো পাকা সোনার দামও ২৫০ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৩৩,০০০ টাকা। ৩% জিএসটি যোগ করে ১,৩৬,৯৯০ টাকা। গয়নার হলমার্ক সোনা ১,২৬,৪৫০ টাকায় পৌঁছেছে। কর নিয়ে ১,৩০,২৪৩.৫ টাকা। তবে তা নজিরের থেকে কম।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বছরের শুরুতেও কলকাতার বাজারে খুচরো পাকা সোনা ছিল ৭৭,১৫০ টাকা। সোনার গয়না ৭৩,৩০০ টাকা। সেখান থেকে তা বেড়ে গিয়েছে যথাক্রমে ৫৫,৮৫০ টাকা এবং ৫৩,১৫০ টাকা। রুপোর বৃদ্ধি তো সেখানে আরও অনেক বেশি। খুচরো রুপো ৮৬,৩৫০ টাকা থেকে বেড়েছে ১,১৩,৬৫০ টাকা। অনেকেই বলছেন, বছর পাঁচেক আগে করোনার সময়ে সোনা-রুপোর যে দাম ছিল, এ বছর এখনই বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে তার থেকে বেশি। ফলে দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটাই ভাবাচ্ছে সকলকে।
জে জে গোল্ড হাউসের কর্তা হর্ষদ অজমেঢ়ার দাবি, বর্তমানে বাজারে রুপোর চাহিদা এবং জোগানের মধ্যে ৩০% ফারাক রয়েছে। ধাতু হিসেবে তা কেনায় আগ্রহ প্রায় নেই। বেশি চাহিদা পণ্য বাজার এবং এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) ক্ষেত্রে। আবার কয়েক দিন আগেই রুপোকে অত্যাবশ্যক খনিজ হিসেবে ঘোষণা করেছে আমেরিকা। চিন বাজারে রুপো বিক্রি করছে না। বরং তা জমা করছে। বৈদ্যুতিক গাড়ি, সোলার প্যানেল, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম-সহ বিভিন্ন শিল্পে রুপো ব্যবহার হয়। ফলে সব মিলিয়ে দাম বাড়ছে ধাতুটির। কয়েক দিনের মধ্যে দামে সাময়িক ভাবে ২০%-২৫% সংশোধন হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তা আরও বৃদ্ধিরই সম্ভাবনা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)